কালো থেকে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায়
৯ই এপ্রিল বুধবার ২০২৫
ছবি সংগৃহীত
পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের মানুষ রয়েছে। কেউ কালো কেউবা ফর্সা আবার কেউবা শ্যামলা বা মধু শ্যামলা। তবে যারা কালো বর্ণের তারা সব সময় চায় নিজেদেরকে ফর্সা করে তুলতে।
শরীরের রং ফর্সা করতে বা কালো রং দূর করা খুব একটা সম্ভব না হলেও আজকালকার যুগে কৃত্রিম উপায়ে মানুষ নিজেদের শরীরের কালো রং ফর্সা করে থাকে। এটি মোটেও শরীরের জন্য ভালো নয়।
যাদের রং বাবা কালো তারা কিছু ঘরোয়া উপায় মেনে চললে বা পদ্ধতিতে নিজেদের গায়ের রং ফর্সা করতে পারেন।
কালো থেকে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়বস্তু নিয়েই থাকছে আমাদের আজকের মূল আলোচনা। সাথেই আপনাদের জন্য আরও থাকছে, স্থায়ী ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সমূহ।
তাই আমাদের আজকের পোস্টটি অবশ্যই সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন যেন কাল থেকে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিশদ তথ্য পেতে পারেন।
কালো থেকে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায়
১.একটি পাত্রে এক চা চামচ এলোভেরা জেল, হাফ চামচ হলুদ গুঁড়ো, হাফ চামচ বেকিং সোডা, সামান্য মধু একসাথে মিশিয়ে একটি পেজ তৈরি করে নিতে পারেন। দিনে যে কোন সময় বা রাত্রে এটি শরীরে ১৫ থেকে ২০ মিনিট মেসেজ করে উষ্ণ গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এরে শরীরের রং ফর্সা করতে খুব দ্রুত সাহায্য করে সপ্তাহে তিন দিন এটি ব্যবহার করলে খুব দ্রুত ফলাফল পাবেন।
২.সামান্য মধু, এলোভেরা জেল,লেবুর রস এবং নারিকেল তেল একসাথে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিতে পারবেন। সপ্তাহে তিন দিন এটি ব্যবহার করতে পারেন।
৩. মুসুরির ডাল বাটা, নারিকেল তেল, অ্যালোভেরা জেল, মধু এবং লেবুর রস একসাথে মিশিয়ে একটু পেস্ট তৈরি করতে পারেন। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন রাত্রে শোয়ার আগে বা গোসলের আগে এবং মুখে ব্যবহার করতে পারবেন ।
স্থায়ী ফর্সা হওয়ার উপায়
১.ত্বককে ভেতর থেকে স্থায়ীভাবে ফর্সা করতে হলে কিছু খাবার নিয়মিত খেতে হবে। প্রতিদিন এক গ্লাস দুধের মধ্যে হাফ চামচ বা সামান্য কাঁচা হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে তার শরীরকে ভেতর থেকে ফর্সা করতে সাহায্য করে।
২.দুধ, লেবুর রস ও হলুদ গুঁড়ো একসঙ্গে মিশিয়ে একটি মিশ্রন বা পেস্ট তৈরি করুন। সারা মুখে এই পেস্ট ভালভাবে লাগিয়ে প্যাকটি শুকনো হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিয়ে নরম তোয়ালে দিয়ে আলতো করে মুছে নিন। গরম পানিতে মুখ ধোবেন না এবং অন্তত ১২ ঘণ্টা রোদে যাবেন না।
৩.প্রতিদিন পুষ্টিকর এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার খান। প্রতিদিন দুই থেকে তিন লিটারের মতো পরিষ্কার স্বচ্ছ পানি পান করতে হবে। ডাবের পানিও তাই এভাবে গায়ের রং ফর্সা করতে সাহায্য করে।
কালো থেকে ফর্সা হওয়া কি সম্ভব
মানুষের গায়ের রং জন্মগতভাবে হয়ে থাকে। আরো কালো বা কারো ফর্সা, বা কারো সংলগ্নের রং হয়ে থাকে। কালো থেকে ফর্সা হওয়ার সম্ভব। তবে এর জন্য মেনে চলতে হবে কিছু খাদ্যা অভ্যাস এবং কিছু রূপচর্চা কোন প্রয়োজন। কালো থেকে ফর্সা হওয়ার জন্য যে কাজগুলো করা প্রয়োজন -
• টকদই আমাদের শরীরে ডার্ক সার্কেল দূর করতে সাহায্য করে। টক দইয়ের সাথে কালোজিরা বুড়ো মিশিয়ে খেলে শরীরের রং ফর্সা করতে সাহায্য করে।
•টমেটো তে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সাইড। যা মৃত কোষ ধ্বংস করতে সাহায্য করে এবং ত্বক ফর্সা করে, টক দই এবং হলুদ একসাথে বেটে মাখলে তা খুব দ্রুত কাজ করে।
•কাঁচা দুধ এবং হলুদ গুঁড়ো একসাথে মাখলে শরীরের রং ফর্সা করতে সাহায্য করে ।
•এলোভেরা জেল এবং লেবুর রস একসাথে টেস্ট তৈরি করে তার শরীরে বা মুখে মাখে, শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। শুকিয়ে গেলে উষ্ণ গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি ত্বকের রং ফর্সা করতে খুব দ্রুত কাজ করে। এর সাহায্যে স্থায়ীভাবে ফর্সা হওয়া সম্ভব।
ভেতর থেকে ফর্সা হওয়ার উপায়
আমরা নিজেদের রং ফর্সা করতে বা উজ্জ্বল রং পছন্দ করি। এই কারণে মানুষ নিজেদের রং ফর্সা করতে বিভিন্ন প্রসাধনী বা ঘরোয়া উপকরণ ব্যবহার করে থাকে। ত্বকের রং ভেতর থেকে ফর্সা করার জন্য ঘরোয়া উপাদানই সব থেকে ভালো।
আপনি যদি আপনার ত্বকের রং ভেতর থেকে ফর্সা করতে চান তাহলে সপ্তাহে ৩-৪ দিন এই কাজগুলো মেনে চলুন।
- ৪ টেবিল চামচ মধুর সাথে ২ টেবিল চামচ কাচা হলুদ বাটা মিক্স করে পেষ্ট তৈরি করুন।
- তৈরিকৃত পেস্ট আপনার মুখে লাগিয়ে ১-২ ঘন্টা রেখে দিন।
- তার পর হালকা গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিন।
- এভাবে এই কাচা হলুদ ও মধুর প্যাক সপ্তাহে ৩-৪ দিন ব্যবহার করলে ন্যচারালি আপনি হয়ে যাবেন কালো থেকে ফর্সা।
কালো থেকে ফর্সা হওয়ার ক্রিম
শরীরের কালো রং দূর করে ফর্সা হওয়ার জন্য বাজারে অনেক রকম প্রসাধনী বা ক্রিম পাওয়া যায়। যা শরীরের রং কালো থেকে ফর্সা করতে সাহায্য করে। ছেলে মেয়ে উভয়েই এই ধরনের প্রসাধন এগুলো ব্যবহার করতে পারবে।
কিছু ক্রিম বা প্রসাধনের নাম দেয়া হলো যা কালো থেকে ফর্সা হতে সাহায্য করে -
• ডার্মালজিকা ওভারনাইট ক্লিয়ারিং জেল
আপনার ত্বকে অ্যাকনে আর অন্য নানা দাগছোপ আছে? তাহলে তার প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এই ওভারনাইট জেল ব্যবহার করা আপনার পক্ষে খুবই জরুরি | এর অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল আর অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান সিবাম নিয়ন্ত্রণে রাখে আর ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করে ত্বককে সারিয়ে তোলে, আরাম দেয়, বজায় রাখে আর্দ্রতা| রাতে শুতে যাওয়ার আগে মুখে পুরু করে এই জেলটি মাখুন আর সকালে উঠে মুখ ধুয়ে ফেলার পরে দেখুন কেমন পরিবর্তন চোখে পড়ছে।
• ল্যাকমে ইয়ুথ ইনফিনিটি স্কিন স্কাল্পটিং নাইট
ক্রিম
ম্যাড়মেড়ে আর ঝুলে যাওয়া ত্বক দেখতেও অসুস্থ লাগে আর তা হতাশার কারণও হয়ে ওঠে! যদি এগুলিই আপনার ত্বকের মূল সমস্যা হয়, তাহলে নির্ভর করুন এই অ্যান্টি-এজিং নাইট ক্রিমের উপরে| এটি ত্বকের টানটান ভাব বাড়ায়, আর ত্বকের বাঁধুনি দৃঢ় করে| এর লুমিনাইজ়িং পার্লস ত্বককে করে উজ্জ্বল আর ঝলমলে।
• পন্ডস এজ মিরাকল রিঙ্কল কারেক্টর নাইট ক্রিম
অকালে ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করতে আর ত্বকে বয়সজনিত চিহ্নগুলির মোকাবিলা করতে ব্যবহার করুন পন্ডসের এই রিঙ্কল কারেক্টিং নাইট ক্রিম| এটি কোষের পুনরুজ্জীবন ঘটায় তাড়াতাড়ি আর চোখে পড়ার মতো যে সব সূক্ষ্ম বলিরেখা, ডার্ক স্পটস, স্মাইল লাইনস আর ডার্ক সার্কলস আছে, সেগুলিও কমাতে সাহায্য করে।
স্থায়ীভাবে ফর্সা হওয়ার সাবান
বাজারে স্থায়ীভাবে ফর্সা হওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের সাবান পাওয়া যায়। যা স্থায়ী ভাবে তাকে রং ফর্সা হতে সাহায্য করে। এই ধরনের সাবান গুলি প্রাকৃতিকভাবে বা প্রাকৃতিক উপাদান দ্বারা তৈরি করা হয়ে থাকে। এগুলো আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত ভালো। তাই এই সাবান গুলোই স্থায়ীভাবে ত্বকের রং ফর্সা করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন।
•এলোভেরা জেল সাবান
•অরেঞ্জ পিল সাবান
• জিগ্লো কোজিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন ই সাবান
• জিগ্লো ম্যাক্স কোজিক অ্যাসিড
• গ্লুটাথিয়ন সাবান
• ব্ল্যাক সাবান
কি খেলে ভেতর থেকে ফর্সা হওয়া যায়
অনেকেই মসৃণ উজ্জ্বল ত্বক চায়। কিন্তু অনেক সময় নিয়মিত যত্ন আর নামি-দামি কসমেটিকস ব্যবহারের পরও ত্বকের সৌন্দর্য ঠিক থাকে না। ত্বক ঠিক রাখতে খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুম আর স্বাস্থ্যের অবস্থা ভীষণভাবে জড়িত। এছাড়া অনেক খাবার রয়েছে যা খেলে আপনার ত্বক ভেতর থেকে ফর্সা হবে।
• প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
•টমেটো খেলে শরীরের রঙ ভেতর থেকে ফর্সা হয়, এর অ্যান্টি বডি শরীরে কালো রং দূর করতে সাহায্য করে।
•কলা আমাদের শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে, এটিও আমাদের শরীরের কালো রং দূর করে।
• গাজর যেমন চোখে দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে ঠিক তেমনি শরীরের কালো রঙও দূর করতে সাহায্য করে।
•আমরা জানি যে বাদাম মূলত ফ্যাট জাতীয় খাবার তবে এটি শরীরের রং ফর্সা করতে সাহায্য করে।
লেখকের মন্তব্য
আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সকলে কালো থেকে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ মতামত আমাদের জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন এবং আমাদের পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার পরিবার এবং পরিজনের সকলকে স্থায়ী ভাবে ফর্সা হওয়ার সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যগুলো জানার সুযোগ করে দিন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url