প্রতিদিন খালি পেটে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা
প্রতিদিন খালি পেটে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা
৮ই এপ্রিল মঙ্গলবার ২০২৫
আমলকি ফাইলান্থাসি পরিবারের ফাইলান্থুস গণের একপ্রকার ভেষজ ফল। সংস্কৃত ভাষায় এর নাম 'আমলক'। ইংরেজি নাম amla বা বৃক্ষ। এতে সমস্ত ধরণের জরুরি মিনারেলস ও ভিটামিন থাকে, যা শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। কাঁচা বা জুস বানিয়ে আমলকি খেতে পারেন।
*দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে আমলকি সাহায্য করে। মধুর সঙ্গে এক চামচ আমলকির পাওডার মিশিয়ে খেলে চোখের ছানির সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যায়।
*ফোড়ন দেয়া আমলকির রস পান করলে জ্বর কমানো যায়। এছাড়া, দাঁতে ব্যথা ও ক্যাভিটি হলে আমলকির রসে সামান্য কর্পূর মিশিয়ে মাড়িতে লাগালে স্বস্তি পেতে পারেন।
*যে কোনও উপায় আমলকি খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে। এ ছাড়া হিচকি উঠলে বা বমি হলে আমলকির রসে মিশ্রী মিশিয়ে দিনে দু-তিন বার পান করলে স্বস্তি পেতে পারেন।
২. শুকনো আমলকি খেলে কি হয় ?
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আমলকী রোদে শুকিয়ে খেলে অনেক রোগের ঝুঁকি কমে যায়। এখন এর উপকারিতা সম্পর্কে চলুন জেনে নিই।
*রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় শুকনা আমলকী। কারণ এতে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি।
*হজম প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে খেতে পারেন শুকনা আমলকী। শুকনা আমলকী পানিতে ফুটিয়ে খেলে পেটের সমস্যা দূর হয়। যেমন―এসিডিটি, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং বদহজম।
*আমলকীতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও সি।
*শুকনো আমলকি রাতকানা রোগ দূর করতে সাহায্য করে।
৩.প্রতিদিন কয়টি আমলকি খাওয়া উচিত ?
আমলকি মূলত একটি ফল বা ভেষজ ঔষধ হিসেবে আমরা চিনে থাকি কিন্তু এর অনেক গুনাগুন ও উপকারিতা রয়েছে যা আমরা জানি না। আমলকির 'এন্টি-অক্সিডেন্ট'রূপে কার্যকারিতার পেছনে মূল ভূমিকা ভিটামিন-সি এর নয়, বরং 'এলাজিটানিন' নামক পদার্থসমূহের বলে মনে করা হয়। যেমন এমব্লিকানিন-এ (৩৭%), এমব্লিকানিন-বি (৩৩%), পানিগ্লুকোনিন (১২%) এবং পেডাংকুলাগিন (১৪%). এতে আরো আছে পানিক্যাফোলিন, ফিলানেমব্লিনিন-এ, বি, সি, ডি, ই এবং এফ। এই ফলে অন্যান্য 'পলিফেনল'ও থাকে। যেমন- ফ্ল্যাভোনয়েড, কেমফেরল, এলাজিক এসিড ও গ্যালিক এসিড। যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী বিশেষজ্ঞগণ বলে থাকেন, আমাদের জন্য প্রতিদিন অন্তত দুইটা করে আমলকি খাওয়া উত্তম।
তাই প্রতিদিন দুইটা করে আমলকি খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
৪.আমলকি কখন বা কোন সময় খাওয়া উত্তম?
আমলকির গুণের কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। রোজ সকালে খালি পেটে এক টুকরো আমলকি খান। তাতেই রোগমুক্ত থাকবে শরীর। সর্দি-কাশি তো দূরে থাকেই, এমনকি ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণের হাত থেকেও রক্ষা করে আমলকি। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সাইড যার শরীরের জন্য খুবই উপকারী তাই রোজ সকালে আমলকি খাওয়া উচিত।
৫.আমলকি খাওয়ার সঠিক নিয়ম?
তাজা আমলকি খাওয়াই সবচেয়ে ভালো। সকালে খালিপেটে এক কুচি কাঁচা আমলকি গরম পানির সঙ্গে বা এক চা চামচ আমলকির জুস এক গ্লাস উষ্ণ গরম পানির সঙ্গে - এভাবেই খেতে বলা হয়। শুকনো আমলকির ভিটামিন 'সি'-র পরিমাণ অনেকটাই কমে যায় এবং এতে নুন যোগ করা হলে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয়। যাদের হাই ব্লাড প্রেশারের সমস্যা আছে তারা এই লবন যুক্ত শুকনো আমলকি না খেয়ে ফ্রেশ আমলকিই ডায়েটে রাখবেন। যাঁদের কিডনির সমস্যা আছে তাঁরা আমলকি এড়িয়ে চলুন, কারণ এতে পটাশিয়ামের পরিমাণ খুব বেশি থাকে।
৬.আমলকি খেলে কি ক্ষতি হয়?
আমলকি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী হলেও কিছু ক্ষেত্রে এটি আমাদের ক্ষতিও করে থাকে।তাই অতিরিক্ত বা বেশি পরিমাণে আমলকি খাওয়া কখনোই উচিত না। আমলকি খেলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় যেমন -
*কোষ্ঠকাঠিন্য বা আলসারের সমস্যা
*গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয়
*এটি কিডনি এবং হার্টের প্রবলেম তৈরি করে
*শরীরে পানি শূন্যতা তৈরি করে
*কিডনি স্টোন বা লিভারের সমস্যার সৃষ্টি করে
লেখকের মন্তব্য
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url