মেয়েদের ভাঙতি রোজা করা অত্যাবশ্যক জরুরি
মেয়েদের ভাঙতি রোজা করা অত্যাবশ্যক জরুরি কেন ?
১৯ শে এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪
রমজান মাস হলো আমাদের জন্য মহান আল্লহর দেয়া নেয়ামতসরূপ। এ মাসে মহান আল্লাহ তায়ালা ১ টা নেকির বদলে ৭০ গুন বেশি নেকি দেয়। মেয়েদের সাধারনত আমরা জানি যে মাসে মাসে পিরিয়ড হয়। সে কারনে মেয়েরা রমজানের সকল রোজাগুলো করতে পারে না। মেয়েদের সাধারনত ৩/৪/৫/৬/৭ দিন ভাঙ্তি পড়ে। এ ভাঙ্তিগুলো আমাদের রমজানের ঈদের শেষে করে নিতে হয়।
কোনো নারীর যদি ফজরের আগেই পিরিয়ড শুরু হয়ে যায়, ওই নারীর জন্য দিনের বেলা খাওয়াদাওয়া করা বৈধ। তবে গোপনে পানাহার করা উচিত। (আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৪২৮)
পিরিয়ডের কারণে রোজা না রেখে দিন শুরু করার পর পিরিয়ড বন্ধ হলে দিনের বাকি অংশ রোজাদারদের সাদৃশ্য অবলম্বন করে পানাহার বর্জন করবে। কিন্তু এ দিনের রোজাও পরে কাজা করে নিতে হবে। (আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৪২৮), বাহুরুর রায়েক : ২/২৯১)
রমজান মাসে রাতে গোসল ফরজ হলে গোসল না করেও দিনে রোজা রাখা বৈধ। গোসল না করায় রোজার ক্ষতি হবে না। তবে ফরজ গোসলে বিলম্ব করা অনুচিত। নারী যদি নিজের অভ্যাস অনুযায়ী বুঝতে পারে যে আগামীকাল তার মাসিক শুরু হবে, তবু সে রোজা ভাঙবে না, যতক্ষণ না সে তার পিরিয়ডের রক্ত দেখতে পায়। (আপকে মাসায়েল : খ. ৩, পৃ. ২৭৮)
তিন থেকে ১০ দিন পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদে মাসিক ঋতুস্রাবকালীন নামাজ-রোজা বন্ধ রাখবে। কোনো কারণে ঋতুস্রাবের সময় ১০ দিনের চেয়ে বেড়ে গেলে নিজের আগের অভ্যাস অনুপাতে যে মেয়াদ আছে, ওই দিন পর্যন্ত বন্ধ রেখে এর পর থেকে নামাজ-রোজা পালন করবে। আর যদি ১০ দিনের ভেতরই শেষ হয়ে যায়, তাহলে রক্ত আসার শেষ দিন পর্যন্ত ঋতুস্রাব গণ্য করে নামাজ, রোজা ইত্যাদি বন্ধ রাখবে। (আদ্দুররুল মুখতার : ১/৩০০-৩০১)
সহিহ বোখারি ও মুসলিমঃ-
রোজা কাজা করা আর নামাজ কাজা না করা সম্পর্কে উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশা (রা.) যা বলেছেন সমস্ত উলামায়ে কেরাম তার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন অর্থাৎ ইজমা বা ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
মাসয়ালা : হায়েজ (মাসিক পিরিয়ড), নেফাসের (প্রসব পরবর্তী স্রাব) সময়গুলোতে রোজা রাখা নিষেধ, তবে পরবর্তীতে এ দিনগুলোর রোজার কাজা করতে হবে।
মাসয়ালা : হায়েজ, নেফাসওয়ালি মহিলা বাচ্চাদেরকে কোরআন শরিফ বানান করে শিক্ষা দিতে পারবে। তবে রিডিং পড়ানোর সময় ১ শ্বাসে পূর্ণ ১ আয়াত পড়াতে পারবে না বরং শ্বাস ভেঙ্গে ভেঙ্গে ১-২ শব্দ করে পড়াতে হবে।
মাসয়ালা : গর্ভবর্তী বা স্তন্যদানকারিনী রোজাদার মহিলার যদি রোজা রাখার কারণে বাচ্চার বা তার প্রাণহানি মা মারাত্মক স্বাস্থ্যহানির প্রবল আশঙ্কা হয়, তবে রোজা ভেঙ্গে ফেলা জায়েজ; অন্যথায় জায়েজ হবে না।
মাসয়ালা : দুধ পান করানোর দ্বারা মহিলাদের রোজা ও অজু ভাঙ্গে না। রোজা এ জন্য ভাঙ্গে না, দুধ বের হওয়াই স্বাভাবিক। রোজা তো পানাহার ও যৌনাচার থেকে বিরত থাকার নাম। -ফাতাওয়া দারুল উলুম: ৫/৪০
হযরত আম্মাজান আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত হাদিস বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি বলেন, ‘রমজান মাসে আমার যে রোজাগুলো ছুটে যেত পরবর্তী শাবান মাসের মধ্যেই আমি তা করে ফেলতাম।’ (বুখারি ও মুসলিম)
যদি কোনো নারী শরিয়তসম্মত কারণবশত রমজানে তার ভাংতি রোজাগুলো পরবর্তী রমজান আসার আগে কাজা রোজা করতে না পারে, তবে রমজানের পরবর্তী সময় সেই (পূর্বের রমজানের) রোজাগুলো তাকে অবশ্যই কাজা রোজা করে নিতে হবে।
হানাফি আলেমরা বলেন, যদি কোনো নারী রমজানে তার ভাংতি রোজাগুলো পরবর্তী রমজান আসার আগে কাজা রেজা করতে না পারে, তার জন্য ফিদিয়া আদায় করতে হবে না; তার এই বিলম্বের জন্য শরিয়তসম্মত কোনো ওজর থাকুক বা না থাকুক। শুধু কাজা করে নিলেই চলবে।
পরিশেষে বলা যায় যে, আমাদের এ সকল কাজা রোজা করা অত্যাবশ্যক জরুরী। আমাদের কাজা রেজা করতে হবে, নাহলে মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের পরকালে শাস্তি দেবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url