চুলের যত্নে মেথির ব্যবহার
চুলের যত্নে মেথির ব্যবহার
৪ এ এপ্রিল ২০২৪ বৃহস্পতিবার
চুল হলো মেয়েদের সৌন্দর্যের প্রতিক।চুল না থাকলে মেয়েদেরকে দেখতে ভালো লাগে না। মেয়েরা যদি কালোও হয় যদি তার ঘন চুল থাকে তাহলে মেয়দেরকে খুবই সুন্দর লাগে। শুধু মেয়ের না ছিলো লেদেরও চলে লে ভালো লাগে।
বাঙালীদের কেশচর্চার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, নানা কৌশলে সুবিন্যস্ত কেশই ছিল তাদের শিরোভূষণ। এমনকি পুরুষরাও লম্বা বাবরীর ন্যায় চুল রাখতেন।চুল আভিজাত্য, সামাজিক অবস্থান ও সৌখিনতার প্রতীক।
রমনীর কেশ বাঙালীর এক অবসেশন। কিন্তু তার উপর রয়েছে চুলের নানা রকম সমস্যা যেমন- চুল পড়া, খুশকী, চুলের অকালপক্কতা, মাথার ছত্রাক সমস্যা এবং আরো অনেক। সঠিকভাবে চুলের প্রকার ও সমস্যা চিহ্নিত করে উপযুক্ত সমাধান বেছে নিতে পারলে এই সমস্যা দ্রুত কাটিয়ে উঠা সম্ভব। আমাদের জীবনে মেথির ব্যাবহার খুবই গুরুত্ত রয়েছে। মেথি দিলে চুল পরা বন্ধ হয়, চুল ঘন হয়, চুল মজবুত হয় ইত্যাদি।
চুলের সমস্যা সমাধানে মেথির ২ টি ব্যাবহার নিচে দেওয়া হলোঃ-
১. চুল পড়া সমস্যা
চুল পড়া সত্যিই একটি বিব্রতকর সমস্যা। বহুবিধ কারণেই চুল পড়তে পারে। তবে দৈনিক গড়ে ৫০ থেকে ১০০টি পর্যন্ত চুল পড়াকে স্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া হয়। তবে বেশী করে চুল পড়া শুরু করলে তা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে এর জন্য চিন্তার ভারটা মেথির উপর ছেড়ে দেয়াই শ্রেয়। চুল পড়া সমস্যায় এবং চুলের যত্নে মেথির ব্যবহার অত্যন্ত কার্যকরী।
৫০ গ্রাম মেথি ২০০-৩০০ মিলি পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই পানিটুকু ছেঁকে নিন। এ থেকে এক গ্লাস পানি খালি পেটে পান করুন।মেথিতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও নিকোটিনিক এসিড রয়েছে যা চুলকে ভেতর থেকে পুষ্টি যোগায় এবং চুলকে মজবুত করে। এই পানি প্রতিদিন পান করলে পেটের যাবতীয় পীড়াজনিত ও পরিপাকজনিত সমস্যা দূর হয়। দেহের অতিরিক্ত ওজন ও কমে।
বাকী পানিটুকু একটি স্প্রে বোতলে নিয়ে নিন। এবার মাথার ত্বকে এবং চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত এই পানি স্প্রে করুন। এবার আঙুলের ডগার সাহায্যে সারা মাথা ৭-১০ মিনিট ম্যাসাজ করুন। ১ ঘন্টা অপেক্ষা করে চুল ধুয়ে ফেলুন। চাইলে সারারাত এটা মাথায় রাখা যেতে পারে। চুল পড়া কমাতে এবং চুলের ভিত্তিকে মজবুত করতে এর জুড়ি নেই।
২. চুলের খুশকি দূর করতে
খুশকি চুলের অন্যতম প্রধান সমস্যা যা সাধারণত বয়:সন্ধিকালের পূর্বে দেখা যায় না। খুশকি হলে মোটামুটি সবাই লক্ষণ দেখে সহজেই বুঝতে পারে যে মাথায় খুশকি হয়েছে। একটু সচেতনতা ও যথাযথ পরিচর্যার মাধ্যমে সহজেই খুশকিমুক্ত ঘন আর দীর্ঘ চুল পাওয়া যায় এবং বেশীরভাগ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিস্কৃতি লাভ করা যায়।
২-৩ চা চামচ মেথি ১ কাপ পানিতে ১০-১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। এবার মেথিসহ কিছুটা পানি ব্লেন্ড করে পেস্ট করে নিন। এতে ২-৩ চা চামচ টক দই যোগ করুন।এবার এই প্যাকটি মাথার ত্বকে ভালভাবে লাগিয়ে নিন। ৩০-৪০ মিনিট অপেক্ষা করে তারপর শ্যাম্পু করে ফেলুন। খুব বেশী খুশকি সমস্যা হলে সপ্তাহে অন্তত ১ দিন আর কম হলে ১৫ দিনে একবার এই প্যাকটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
খুশকি সাধারণত শুষ্ক ত্বক এবং ছত্রাক সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে। মেথি মাথার পুষ্টি যোগায় এবং ছত্রাক সংক্রমণ রোধ করে।
নিয়মিত ব্যবহারে যে ফল পাবেন
(১) চুল পড়া বন্ধ হয়।
(২) চুলের গোড়া মজবুত হয়।
(৩) অকালে চুল পাকা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
(৪) আগের তুলনায় চুলের রুক্ষতা কমে, তাতে কোমলতা ফিরে আসে।
(৫) স্ক্যাল্পের চুলকানি কমে ও খুশকি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
চুল পরা বন্ধে মেথির ৪ টি ব্যাবহার নিচে লেখা হলোঃ-
১. কারি পাতা ও মেথি
মেথি সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন কারি পাতার সঙ্গে বেটে চুলে লাগান। কয়েক মিনিট ম্যাসাজ করুন। এরপর অপেক্ষা করুন ৪০ মিনিট। ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন চুল।
২. দই ও মেথি
২ টেবিল চামচ মেথি ৮ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর বেটে আধা কাপ দইয়ের সঙ্গে মেশান। মিশ্রণটি চুলে ৩০ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন শ্যাম্পু দিয়ে।
৩. মেথি ও ডিম
মেথি ভিজিয়ে রাখুন ঘুমানোর আগে। পরদিন মেথি বেটে একটি ডিম মিশিয়ে নিন। হেয়ার প্যাকটি চুলে লাগিয়ে শাওয়ার ক্যাপ পরে নিন। ৩০ মিনিট পর মাইল্ড শ্য়ে ফেলুন চুল।
৪. লেবু ও মেথি
৩ টেবিল চামচ মেথি পানিতে ভিজিয়ে রাখুন সারারাত। পরদিন সকালে বেটে ৪ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিন। শ্যাম্পু করার আগে ৪৫ মিনিট প্যাকটি লাগিয়ে রাখুন চুলে।
পরিষেশে বলা যায় যে, আমাদের ওপরের জিনিসগুলো মানলে আমাদের চুলের জন্য উপকার হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url