OrdinaryITPostAd

আওয়াবিন নামাজের গুরুত্ত ও ফজিলত


 আওয়াবিন নামাজের গুরুত্ত ও ফজিলত  

৩০ শে এপ্রিল মঙ্গলবার ২০২৪



    ছবি সংগ্রহীত 




আমাদের মহান আল্লাহ তায়ালা ফরজ নামাজের পাশাপাশি  আমাদেরকে নফল নামাজও দিয়েছেন। নফল নামাজের মধ্যে রয়েছে আওয়াবিন নামাজ। এই নামাজ মাগরিব নামাজের পর পড়তে হয়। এই নামাজ এশার নামাজের আগ পর্যন্ত থাকে।এই নামাজ সাধারনত ছয় ওয়াক্ত পড়তে হয়। নামাজ একটি শ্রেষ্ঠ ইবাদত। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ ছাড়া আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ নামাজ আছে। নফল নামাজগুলোর মধ্যে আওয়াবিন অন্যতম। অনেক হাদিসে এ নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।



হাদিসে এসেছে, কিয়ামতের দিন বান্দার সর্বাগ্রে নামাজের হিসাব হবে। ফরজ নামাজের ঘাটতি দেখা দিলে নফল আছে কি না দেখতে বলা হবে। সম্পূর্ণ হাদিসখানা উল্লেখ করছি-



عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ - رضى الله عنه ‏ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏"‏ إِنَّ أَوَّلَ مَا يُحَاسَبُ بِهِ الْعَبْدُ بِصَلاَتِهِ فَإِنْ صَلَحَتْ فَقَدْ أَفْلَحَ وَأَنْجَحَ وَإِنْ فَسَدَتْ فَقَدْ خَابَ وَخَسِرَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ هَمَّامٌ لاَ أَدْرِي هَذَا مِنْ كَلاَمِ قَتَادَةَ أَوْ مِنَ الرِّوَايَةِ ‏"‏ فَإِنِ انْتَقَصَ مِنْ فَرِيضَتِهِ شَىْءٌ قَالَ انْظُرُوا هَلْ لِعَبْدِي مِنْ تَطَوُّعٍ فَيُكَمَّلُ بِهِ مَا نَقَصَ مِنَ الْفَرِيضَةِ ثُمَّ يَكُونُ سَائِرُ عَمَلِهِ عَلَى نَحْوِ ذَلِكَ ‏"‏ ‏.‏ خَالَفَهُ أَبُو الْعَوَّامِ


হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “কিয়ামতের দিন বান্দার নিকট থেকে তার আমলসমূহের মধ্যে যে আমলের হিসাব সর্বাগ্রে নেওয়া হবে, তা হল নামায। নামায ঠিক হলে সে পরিত্রাণ ও সফলতা লাভ করবে। নচেৎ (নামায ঠিক না হলে) ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। 


সুতরাং (হিসাবের সময়) ফরয নামাযে কোন কমতি দেখা গেলে আল্লাহ তাবারাকা অতাআলা ফিরিশ্‌তাদের উদ্দেশ্যে বলবেন, ‘দেখ, আমার বান্দার কোন নফল (নামায) আছে কি না।’ অতএব তার নফল নামায দ্বারা ফরয নামাযের ঘাটতি পূরণ করা হবে। অতঃপর আরো সকল আমলের হিসাব অনুরুপ গ্রহণ করা হবে।” -আবূ দাঊদ, সুনান ৭৭০, তিরমিযী, সুনান ৩৩৭, সহিহ, ইবনু মাজাহ হাঃ ১৪২৫, সহিহ তারগিব ১/১৮৫

এই হাদিসের আলোকে নফলের গুরুত্ব অনুধাবন করা যায়।


আরেক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে-



মহানবী (সাঃ) বলেন, আল্লাহ বলেন, “যে ব্যক্তি আমার ওলীর বিরুদ্ধে শত্রুতা পোষণ করবে, আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করব। বান্দা যা কিছু দিয়ে আমার নৈকট্য লাভ করে থাকে তার মধ্যে আমার নিকট প্রিয়তম হল সেই ইবাদত, যা আমি তার উপর ফরয করেছি। আর সে নফল ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য অর্জন করতে থাকে। পরিশেষে আমি তাকে ভালোবাসি। 


অতঃপর আমি তার শোনার কান হয়ে যাই, তার দেখার চোখ হয়ে যাই, তার ধরার হাত হয়ে যাই, তার চলার পা হয়ে যাই! সে আমার কাছে কিছু চাইলে আমি অবশ্যই তাকে তা দান করি। সে আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করলে আমি অবশ্যই তাকে আশ্রয় দিয়ে থাকি। আর আমি যে কাজ করি তাতে কোন দ্বিধা করি না -যতটা দ্বিধা করি এজন মুমিনের জীবন সম্পর্কে; কারণ, সে মরণকে অপছন্দ করে। আর আমি তার (বেঁচে থেকে) কষ্ট পাওয়াকে অপছন্দ করি।”(-বুখারী, হাদিস নং ৬৫০২)



উল্লেখ্য যে, আল্লাহ বান্দার কান, চোখ, হাত ও পা হওয়ার অর্থ হল, বান্দা আল্লাহর সন্তুষ্টি মতেই এ সবকে ব্যবহার করে। যাতে ব্যবহার করলে তিনি অসন্তুষ্ট, তাতে সে ঐ সকল অঙ্গকে ব্যবহার করে না।


হজরত হুজায়ফা রা. বলেন, ‘আমি নবীজির সা. কাছে এসে তার সাথে মাগরিবের নামাজ আদায় করলাম। তিনি মাগরিবের পরে ইশার নামাজ পর্যন্ত নফল নামাজে রত থাকলেন।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ২/১৫)


আওয়াবিন নামাজের ফজিলত সম্পর্কে নিম্নে বর্ননা  করা হলোঃ-



১. হজরত আম্মার ইবনে ইয়াজিদের ছেলে মোহাম্মদ ইবনে আম্মার রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি আমার পিতা আম্মার ইবনে ইয়াসিরকে রা. দেখেছি, তিনি মাগরিবের পর দুই রাকাত পড়তেন এবং বলতেন, আমি আমার প্রিয় মোহাম্মাদ সা.-কে দেখেছি, তিনি মাগরিবের পর ছয় রাকাত নামাজ পড়তেন এবং তিনি বলতেন, যে বান্দা মাগরিবের পর ছয় রাকাত নামাজ পড়বে তার গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হয়।


২.  হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবীজি সা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি মাগরিবের পরে ছয় রাকাত নফল আদায় করে, মাঝখানে কোনো দুনিয়াবি কথা না বলে, তাহলে সেটা বারো বছরের ইবাদতের সমান গণ্য হবে।’ (তিরমিজি: ১/৫৫৯)


৩. হজরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করিম সা. বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মাগরিবের পর বিশ রাকাত নফল নামাজ পড়বে আল্লাহতায়ালা তার জন্য বেহেশতে একটি ঘর প্রতিষ্ঠিত করবেন (অর্থাৎ সে বেহেশতে যাবে)’ (তিরমিজি: ১/৯৮)


হাদিসে আওয়াবিন নামাজের অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। যত গুনাহই থাকুক জীবনে, এই নামাজের মাধ্যমে ক্ষমা করা হবে। মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘মাগরিবের নামাজের পর যে ব্যক্তি ছয় রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে, তার গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে, যদি তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণও হয়।’ (মাজমাউজ জাওয়াইদ) অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি মাগরিবের নামাজের পর এ নামাজ আদায় করবে তার মর্যাদা জান্নাতের উঁচু স্থানে হবে।’ (ইতহাফুস সাদাহ)


১২ বছরের ইবাদতের সমান সওয়াবের সুসংবাদ রয়েছে আওয়াবিন নামাজের বিনিময়ে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মাগরিবের পরে ছয় রাকাত নফল আদায় করে, মাঝখানে কোনো দুনিয়াবি কথা না বলে, তাহলে সেটা ১২ বছরের ইবাদতের সমান গণ্য হবে।’ (তিরমিজি)


পরিশেষে বলা যায় যে আমাদের এই নামাজ পড়তে হবে। পড়লে আমাদেরই লাভ। 



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪