OrdinaryITPostAd

ইসলামের দৃষ্টিতে ১৪ই ফেব্রুয়ারি পালন করা হারাম

 ইসলামের দৃষ্টিতে ১৪ই ফেব্রুয়ারি পালন  করা  হারাম 

১৮ ই এপ্রিল বৃহস্পতিবার  ২০২৪



           ছবি সংগ্রহীত 











ইসলাম হলো আমাদের শান্তির ধর্ম। এ
 ধর্ম আমাদেরকে আলোর  পথে নিয়ে আসতে সহযোগিতা করে। আর ইসলামে আলাদা করে স্বামী  স্ত্রীর ভালোবাসা বাবা মার প্রতি  ভালোবাসার কোনো নির্দিষ্ট  কোন দিন ঠিক  করা নেই। মুসলমানদের ভালোবাসা  সবসময়। 




ইসলাম নারী-পুরুষকে পর্দা করার নির্দেশ দিয়ে উভয়ের বিচরণ ক্ষেত্র পৃথক করেছে এবং উভয়ের দৃষ্টি অবনত রাখার বিধান দিয়েছে। যে সমাজ নারীকে অশ্লীলতায় নামিয়ে আনে, সে সমাজ অশান্তি ও সব পাপাচারের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়। আর এ জন্যই ইসলামে সুনির্দিষ্ট বৈবাহিক সম্পর্কের বাইরে যেকোনো প্রকার সৌন্দর্য বা ভালোবাসার প্রদর্শনী সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে। নারী জাতিকে লক্ষ করে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা জাহেলী যুগের মতো নিজেদের প্রদর্শন করে বাইরে বের হয়ো না।’ (সুরা আহযাব : ৩৩)। এ ব্যাপারে শৈথিল্য প্রদর্শনের পরিণতি ভয়াবহ।




ইসলামে বেগানা নর-নারীর কোনো নির্জন স্থানে মিলিত হওয়া সম্পূর্ণ হারাম। কারণ তাতে ব্যভিচার হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। ব্যভিচার করার আগ্রহ তৈরি হতে পারে এমন কাজের ধারে-কাছে যেতেও কোরআন নিষেধ করেছে। এরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।’ (সুরা ইসরা : ৩২)। ইসলামের নির্দেশনা মতে, কোনো ব্যক্তি শুধু ব্যভিচার থেকে দূরে থেকেই ক্ষান্ত হবে না, বরং এ পথে ধাবিতকারী বিষয় থেকেও দূরে থাকবে। হাদিসে এসেছে, ‘যখনই কোনো পুরুষ পর নারীর সঙ্গে নির্জনে দেখা করে তখনই শয়তান সেখানে তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে উপস্থিত হয়।’ (তিরমিজি : ২১৬৫)। আর শয়তান তাদের ব্যভিচারের দিকে ধাবিত করার অপচেষ্টায় মেতে ওঠে।





ইসলাম বিবাহবহির্ভূত যেকোনো যৌনাচারকে ‘ব্যভিচার’ বলে গণ্য করেছে। হাদিসে এসেছে, ‘দুই চোখের ব্যভিচার হলো পর নারীর প্রতি নজর করা, দুই কানের ব্যভিচার হলো যৌন উত্তেজক কথাবার্তা শ্রবণ করা, মুখের ব্যভিচার হলো পর নারীর সঙ্গে রসালো কণ্ঠে কথা বলা। হাতের ব্যভিচার হলো পর নারীকে স্পর্শ করা এবং পায়ের ব্যভিচার হলো যৌন মিলনের উদ্দেশ্যে পর নারীর কাছে গমন করা। অন্তরের ব্যভিচার হলো হারাম বস্তু কামনা করা; আর যৌনাঙ্গ তা বাস্তবায়ন করে বা মিথ্যা সাব্যস্ত করে।’ (মুসলিম : ৬৯২৫)




যেভাবে এলো বিশ্ব ভালোবাসা দিবসঃ-


অনেকের ধারণা প্রাচীন রোমে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে রোমান দেব-দেবীর রানী জুনোর সম্মানে ছুটির দিন। জুনোকে নারী ও প্রেমের দেবী বলে লোকে বিশ্বাস করত। অনেকের মতে এটাই ছিল  



ভালোবাসা দিবস বা সেন্ট ভ্যালেন্টাইন'স ডে একটি বার্ষিক উৎসবের দিন যা ১৪ই ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা এবং অনুরাগের মধ্যে উদযাপিত হয়। দিবসটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হয়ে থাকে, যদিও অধিকাংশ দেশেই দিনটি ছুটির দিন নয়।



২৬৯ সালে ইতালির রোম নগরীতে সেন্ট ভ্যালেইটাইন'স নামে একজন খ্রিষ্টান পাদ্রি ও চিকিৎসক ছিলেন। ধর্ম প্রচার-অভিযোগে তৎকালীন রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্রাডিয়াস তাকে বন্দি করেন। কারণ তখন রোমান সাম্রাজ্যে খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। বন্দি অবস্থায় তিনি জনৈক কারারক্ষীর দৃষ্টিহীন মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন। 



এতে সেন্ট ভ্যালেইটাইনের জনপ্রিয়তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজা তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই দিন ১৪ ফেব্রুয়ারি ছিল।এরপর ৪৯৬ সালে পোপ সেন্ট জেলাসিউও প্রথম জুলিয়াস ভ্যালেইটাইন'স স্মরণে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন' দিবস ঘোষণা করেন। খ্রিষ্টান জগতে পাদ্রি-সাধু সন্তানদের স্মরণ ও কর্মের জন্য এ ধরনের অনেক দিবস রয়েছে। 



পাশ্চাত্যের ক্ষেত্রে জন্মদিনের উৎসব, ধর্মোৎসব সবক্ষেত্রেই ভোগের বিষয়টি মুখ্য। তাই গির্জা অভ্যন্তরেও মদ্যপানে তারা কসুর করে না। খ্রিষ্টীয় এই ভ্যালেন্টাইন দিবসের চেতনা বিনষ্ট হওয়ায় ১৭৭৬ সালে ফ্রান্স সরকার কর্তৃক ভ্যালেনটাইন উৎসব নিষিদ্ধ করা হয়। ইংল্যান্ডে ক্ষমতাসীন পিউরিটানরাও একসময় প্রশাসনিকভাবে এ দিবস উদযাপন নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। 



এছাড়া অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি ও জার্মানিতে বিভিন্ন সময়ে এ দিবস প্রত্যাখ্যাত হয়। সম্প্রতি পাকিস্তানেও ২০১৭ সালে ইসলামবিরোধী হওয়ায় ভ্যালেন্টাইন উৎসব নিষিদ্ধ করে সেদেশের আদালত। বর্তমানকালে, পাশ্চাত্যে এ উৎসব মহাসমারোহে উদযাপন করা হয়। যুক্তরাজ্যে মোট জনসংখ্যার অর্ধেক প্রায় ১০০ কোটি পাউন্ড ব্যয় করে এই ভালোবাসা দিবসের জন্য কার্ড, ফুল, চকোলেট, অন্যান্য উপহারসামগ্রী ও শুভেচ্ছা কার্ড ক্রয় করতে, এবং আনুমানিক প্রায় ২.৫ কোটি শুভেচ্ছা কার্ড আদান-প্রদান করা হয়।



হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত– ‘আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় পরস্পরকে ভালোবাসে, আমার রেজামন্দির আশায় পরস্পর বৈঠকে মিলিত হয়, আমার সন্তুষ্টির কামনায় পরস্পর দেখা-সাক্ষাৎ করে এবং আমার ভালোবাসার জন্যই নিজেদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে, তাদের ভালোবাসা আমার জন্য ওয়াজিব হয়ে যায়। (মুসলিম)।




হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত-‘রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন– আল্লাহতায়ালার বান্দাগণের মধ্যে এমন কিছু লোক রয়েছে, যারা নবীও নয়, আর শহীদও নয়। কিন্তু বিচার দিবসে তাদের মর্যাদা দেখে নবী ও শহীদগণ তাদের ওপর ঈর্ষা করবেন। জিজ্ঞেস করা হলো- হে আল্লাহর রাসুল! তারা কারা? উত্তরে তিনি বললেন– তারা হচ্ছে সেসব লোক, যারা শুধু আল্লাহর মহব্বতে একে অপরকে মহব্বত করেছে। তাদের মধ্যে নেই কোনো রক্তের সম্পর্ক, নেই কোনো বংশের সম্পর্ক। তাদের মুখমণ্ডল হবে জ্যোতির্ময় এবং তারা নূরের মিম্বরের ওপর অবস্থান করবে। কিয়ামতের বিভীষিকাময় অবস্থায় মানুষ যখন ভীত-সন্ত্রস্ত থাকবে, তখন তারা ভীত হবে না। আর মানুষ যখন দুঃখে থাকবে, তখন তাদের কোনো দুঃখ থাকবে না। (তিরমিজি)।




ভালোবাসা দিবসের নামে ইসলামবহির্ভূত নির্লজ্জ দিবস উদযাপন ইসলামে নিষেধ। বিবাহের আগে তরুণ-তরুণীর পরস্পর দেখা-সাক্ষাৎ, কথাবার্তা-মেলামেশা, প্রেম-ভালোবাসা ইসলাম ধর্মে সম্পূর্ণভাবে হারাম। কোরআন-হাদিসের দৃষ্টিতে ভালোবাসা কেবল বিয়ের পরেই।



বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়, এর মধ্যে অনেক সওয়াবও কল্যাণ রয়েছে। 



অশ্লীলতা-নোংরামিতে ভরপুর বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উদযাপনের নামে এমন বেহায়াপনা কর্মকাণ্ড কখনও ইসলাম সমর্থন করে না। শরীয়ত গর্হিত অশ্লীল বিনোদন উদযাপন করা ইসলামে নিষিদ্ধ। কাজেই এসব অপসংস্কৃতি থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে।





পরিশেষে বলা যায় যে আমাদের এ নোংরামি কাজগুলো  থেকে আমাদের বেচে থাকতে হবে। এবং সবাইকে সজাক রাখতে হবে।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪