OrdinaryITPostAd

রোজার সময় যে সকল কাজ করলে অধিক সওয়াব পাওয়া যায়

 রোজার সময় যে সকল কাজ করলে অধিক  সওয়াব পাওয়া যায়

৫ এ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪




    ছবি সংগ্রহীত 





মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের জন্য রোজাকে ফরজ করেছেন।  আমাদের  রেজা রাখতে হবে। তাহলে আমরা মহান আল্লাহ তায়ালার নৈকট্যপূর্ণ বান্দা হতে পারব। রোজা রাখতে হলে প্রথমে আমাদেরকে রোজা আসার  আগমুহূর্ত থেকে রোজা রাখার নিয়ত করতে হবে এবং রোজা রাখা জন্য চেষ্টা করতে হবে। রোজা আসলে আমাদের  সেহেরির সময় উঠে সেহেরি করতে হবে,তারপর রোজা রাখার নিয়ত করতে হবে।পরে নাম নিয়ে নিজেকে  সবকিছু  থেকে সংযম থাকতে হবে।



মহানবী (সা.)-এর পরিবার ছিল মুসলিম উম্মাহর জন্য আদর্শস্বরূপ। পারিবারিক জীবনে তারাই ছিল শ্রেষ্ঠ দৃষ্টান্ত। আর নবীজি (সা.) তাদেরকে মুসলিম জাতির ‘শিক্ষকরূপেই প্রস্তুত করেছিলেন’। সুতরাং রমজানে নবীজি (সা.)-এর স্ত্রী-পরিবারের আমলগুলো উম্মাহর জন্য অনুসরণীয়।


নবী করিম (সা.) পবিত্র রমজানে নিজেকে পরিপূর্ণরূপে আল্লাহর দরবারে সমর্পণ করে দিতেন। আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে তনু-মন উজাড় করে দিতেন। খাঁটি গোলাম হিসেবে ইবাদতের মাঝে নিজেকে মগ্ন রাখতেন।



নবী করিম (সা.) রমজান মাসে যেসব ইবাদত বেশি করতেন, তার পূর্ণ বিবরণ কোরআন-হাদিসে পরিষ্কারভাবে বর্ণিত আছে। তিনি নিজে এসব আমল করেছেন, উম্মতকে করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। রমজানে করণীয় প্রশ্নে উম্মতের সামনে অনুপম উপমা রেখে গেছেন। 



রমজানে যেসব আমলে বেশি সওয়াব সেগুলোর মধ্যে  ৬টি নিয়ে  নিম্নে বর্ণণা করা হলোঃ-



১. তাকওয়া অর্জন করা---


তাকওয়া এমন একটি গুণ, যা বান্দাহকে আল্লাহর ভয়ে যাবতীয় পাপকাজ থেকে বিরত রাখে এবং তাঁর আদেশ মানতে বাধ্য করে। আর রমজান মাস তাকওয়া নামক গুণটি অর্জন করার এক বিশেষ মৌসুম।

কোরআনে এসেছে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে করে তোমরা এর মাধ্যমে তাকওয়া অবলম্বন করতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)

অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের পথ তৈরি করে দেন।’ (সুরা তালাক, আয়াত : ০২)



২. ফজরের  পর সূর্যদয় পর্যন্ত মসজিদে অবস্থান করা---


ফজরের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত মাসজিদে অবস্থান করা। এটি একটি বিরাট সাওয়াবের কাজ। এ বিষয়ে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজর জামাআত আদায় করার পর সূর্য উদয় পর্যন্ত মাসজিদে অবস্থান করবে, অতঃপর দুই রাকাআত সালাত আদায় করবে, সে পরিপূর্ণ হাজ্জ ও উমারাহ করার প্রতিদান পাবে। (তিরমিজি, হাদিস : ৫৮৬)



৩. অপরকে খাবার খাওয়ানো বা ইফতারির দাওয়াত দেওয়া ---


রমজান মাসে লোকদের খাওয়ানো, বিশেষ করে সিয়াম পালনকারী গরিব, অসহায়কে খাদ্য খাওয়ানো বিরাট সাওয়াবের কাজ । কোরআনে এসেছে, ‘তারা খাদ্যের প্রতি আসক্তি থাকা সত্ত্বেও মিসকিন, এতিম ও বন্দিকে খাদ্য দান করে।’ (সুরা আদ-দাহর, আয়াত : ০৮)


এ বিষয়ে হাদিসে বলা হয়েছে, ‘আবদুল্লাহ ইবন আমর (রা.)মা থেকে বর্ণিত, একজন লোক এসে আল্লাহর রাসুল (সা.)কে জিজ্ঞাসা করলেন, ইসলামে উত্তম কাজ কোনটি? তিনি বললেন, অন্যদেরকে খাবার খাওয়ানো এবং পরিচিত ও অপরিচিত সকলকে সালাম দেওয়া।’ (বুখারি, হাদিস : ১২)অপর বর্ণনায় বর্ণিত আছে যে, ‘যে কোনো মুমিন কোনো ক্ষুধার্ত মুমিনকে খাওয়াবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের ফল খাওয়াবেন।’ (বাইহাকি, শুআবুল ইমান : ৩০৯৮)


রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, পানিমিশ্রিত এক কাপ দুধ বা একটি শুকনো খেজুর অথবা এক ঢোক পানি দিয়েও যদি কেউ কোনো রোজাদারকে ইফতার করায়, তাতেও আল্লাহ তাকে সেই পরিমাণ সওয়াব দান করবেন।

আর যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে তৃপ্তিসহকারে আহার করাবে, আল্লাহতাআলা তাকে আমার হাউসে কাউসার থেকে এমন পানীয় পান করাবেন, যার ফলে সে জান্নাতে প্রবেশ করার আগ পর্যন্ত তৃষ্ণার্ত হবে না।



৪. আত্মীয়তার সম্পর্ক উন্নতি করা---


আত্মীয়তার সম্পর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর তা রক্ষা করাও একটি ইবাদাত। এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন: ‘‘আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, যার মাধ্যমে তোমরা একে অপরের কাছে চাও। আরও তাকওয়া অবলম্বন কর রক্ত সম্পর্কিত আত্মীয়ের ব্যাপারে। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর পর্যবেক্ষক। (সুরা আন-নিসা, আয়াত : ০১)


আনাস ইবন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সালাম বিমিয়ের মাধ্যমে হলেও আত্নীয়তার সম্পর্ক তরতাজা রাখ।’ (সহিহ কুনুযুস সুন্নাহ আন-নবওয়িয়্যাহ : ১৩)



৫. একজন আরেকজনকে কোরআন শোনানো---


রমজান মাসে একজন অপরজনকে কোরআন শুনানো একটি উত্তম আমল। এটিকে দাওর বলা হয়। ইবনে আববাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, জিবরাইল (আ.) রমজানের প্রতি রাতে রাসুল (সা.)-এর সাথে সাক্ষাৎ করতেন এবং রাসুল (সা.) তাকে কোরআন শোনাতেন। (বুখারি, হাদিস : ১৯০২)


ইবনে হাজার (রহ.) বলেন, ‘জিবরাইল প্রতি বছর রাসূলের সাথে সাক্ষাৎ করে এক রমযান হতে অন্য রমজান অবধি যা অবতীর্ণ হয়েছে, তা শোনাতেন এবং শুনতেন। যে বছর রাসূলের অন্তর্ধান হয়, সে বছর তিনি দুইবার শোনান ও শোনেন ।



৬. ইত্তেফাকে বসা---


রমজানে ইতিকাফের প্রতি রাসুল (সা.) প্রচণ্ড আগ্রহী ছিলেন। এতো গুরুত্ব দিতেন যে, এক বছর সফরের কারণে ইতিকাফ করতে না পেরে পরের বছর ২০ দিন ইতিকাফ করেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৪৪৫) তেমনিভাবে শবে কদর পাওয়ার জন্য রাসুল (সা.) ব্যাকুল থাকতেন। চেষ্টা করতেন কোনোভাবেই যেন শবে কদরের ফজিলত থেকে বঞ্চিত না হন। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রমজানের শেষ দশকে নবী করিম (সা.) অন্য সময়ের চেয়ে অনেক বেশি ইবাদত করতেন। শবে কদর পাওয়ার আশায় কোমর বেঁধে প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ১১৭৪)


শবে কদরের ফজিলত সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘রমজানে হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ একটি রাত রয়েছে। এই রাত থেকে বঞ্চিত হলে সর্বপ্রকার কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হতে হয়। দুর্ভাগা ব্যতীত অন্য কেউ এই রাত থেকে বঞ্চিত হয় না।’ (নাসায়ি, হাদিস: ২১০৬)


রোজা হলো আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে রহমত আর বরকতময় মাস এ মাসে সকল ভালো কাজের জন্য ৭০ গুন নেকি। আর ওপরে বর্ণিত আমলগুলো খুবই উপকারী ও গুরুত্বপূর্ণ। 


পরিশেষে বলা যায় যে, আমাদের  ওপরে বর্ণিত কাজগুলো  করতে হবে। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪