ইসলামের দৃষ্টিতে পহেলা বৈশাখ কি হারাম?
ইসলামের দৃষ্টিতে পহেলা বৈশাখ কি হারাম?
১৮ই এপ্রিল ২০১৪ রবিবার
ইসলাম ধর্ম হলো একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যাবস্থা। জীবনের প্রতিটি অনুষঙ্গের ন্যায় হাসি-আনন্দ কিংবা দুঃখ- বেদনা এসব প্রকাশেও ইসলামের নির্দেশনা রয়েছে। ইসলামে আন্নদ-উল্লাসও একটি ইবাদাত। বছরের ৩১ ডিসেম্বর রাতে থাটি ফাস্ট নাইট উদযাপন নামে যা হয় এগুলোর সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই।
এ উদযাপন অমুসলিম এবং বিজাতীয়দের অশ্লীলতা,বেহায়াপনা আর নগ্নতায় ভরা এ আয়োজনে কোন প্রকৃত মুসলিম জড়াতে পারে না। পহেলা বৈশাখ হলো বাংলা মাসের প্রথম দিন। এই দিনে অনুষ্ঠান৷ করা নাজায়েজ। ইসলাম এ ব্যাপারে নিষেধ করেছেন। এই উদযাপনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক নাচ-গান হয়ে থাকে, যা ইসলামে স্পষ্ট হারাম এবং মারাত্মক গুনাহে কবীরা।
এই গান-বাজনা আর বাদ্য যন্ত্রের ব্যাপকতা আল্লাহর আযাবকে তরান্বিত করে। ভূমিধস আর বড়বড় বিপর্যয় নেমে আসে। সাহল ইবন সা’দ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, অচিরেই শেষ যুগে দেখা দিবে ভূমি ধস, নিক্ষেপ ও বিকৃতি। রাসূলুল্লাহ (সা.) কে জিজ্ঞাসা করা হলো, হে আল্লাহ্’র রাসূল! তা কখন? তিনি বললেন, যখন বাদ্যযন্ত্র ও গায়ক-গায়িকারা বেশি হারে প্রকাশ পাবে। (ইবনু মাজাহ্ : ২/১৩৫০)।
আমরা বাঙালি জাতি। আমাদের সতন্ত্র চেতনা ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আছে স্বকীয় ক্যালেন্ডার। বিজাতীয় বর্ষপূর্তিতে আমাদের এমন উদযাপন স্বজাতির চেতনা বিরোধী। আর নতুন বছরের আগমনে খুশি কেন হবে? এতে আনন্দের কী আছে? জীবনের মূল্যবান সময়ের মধ্য থেকে একটি বছর শেষ হয়ে গেল সে জন্য আমাদেরকে অনুতপ্ত হওয়া উচিত।
সেই দিনে মহান আল্অলাহর কাছে মাফ চেতে হবে।অতীতে হয়ে যাওয়া বছরটিতে আমি কী অর্জন করেছি আর কী হারিয়েছি? পরকালীন জীবনের কী প্রস্তুতি নিয়েছি? কারণ নতুন বছরের আগমন মানে তো পরকালের যাত্রা আরেকটু ঘনিয়ে এসেছে। বছরের বিদায়ান্তে একজন সত্যিকার মুসলিম হৃদয়ে এমনি ভাবনা আসা উচিত। অতীত বছরের ভাল-মন্দের হিসাব কষে নতুন বছরের পরিকল্পনা করা উচিত। নিজের ধর্মীয় মূল্যবোধ বিসর্জন দিয়ে বিজায়ী সংস্কৃতিতে জড়িয়ে নিজের পরকালকে ধ্বংস করা উচিত হবে না।
কেননা, দুনিয়ার বুকে যে যার সভ্যতা সংস্কৃতি এবং সাদৃশ্য গ্রহণ করবে, পরকালে তাদের সাথেই তার হাশর হবে। হদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, ইবনু উমার (রা.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি বিজাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে, সে তাদের দলভুক্ত গণ্য হবে। (আবু দাউদ-৪০৩১)। বুখারীর এক বর্ণনায় এসেছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : মানুষ যাকে ভালবাসে সে তারই সাথী হবে। (বুখারী-৬১৬৯)।
মুসলমান কেন এমন শিরকী অনুষ্ঠান বর্জন করবে না? এ বিষয়ে মহান আল্লাহ বলেনঃ-
قُلْ أَنَدْعُو مِن دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَنفَعُنَا وَلَا يَضُرُّنَا وَنُرَدُّ عَلَىٰ أَعْقَابِنَا بَعْدَ إِذْ هَدَانَا اللَّهُ كَالَّذِي اسْتَهْوَتْهُ الشَّيَاطِينُ فِي الْأَرْضِ حَيْرَانَ لَهُ أَصْحَابٌ يَدْعُونَهُ إِلَى الْهُدَى ائْتِنَا ۗ قُلْ إِنَّ هُدَى اللَّهِ هُوَ الْهُدَىٰ ۖ وَأُمِرْنَا لِنُسْلِمَ لِرَبِّ الْعَالَمِينَ
-হে মুহাম্মাদ ! তাদেরকে জিজ্ঞেস করুণ, আমরা কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে তাদেরকে ডাকবো, যারা আমাদের উপকারও করতে পারে না, অপকারও করতে পারে না? আর আল্লাহ যখন আমাদের সোজা পথ দেখিয়ে দিয়েছেন তখন আবার কি আমরা উল্টো দিকে ফিরে যাবো? আমরা কি নিজেদের অবস্থা সে ব্যক্তির মতো করে নেবো, যাকে শয়তানরা মরুভূমির বুকে পথ ভুলিয়ে দিয়েছে এবং সে হয়রান, পেরেশান ও উদ্ভান্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে? অথচ তার সাথীরা তাকে চীৎকার করে ডেকে বলছে, এদিকে এসো, এখানে রয়েছে সোজা পথ? বলো, আসলে আল্লাহর হেদায়াতই একমাত্র সঠিক ও নিভুর্ল হেদায়াত এবং তাঁর পক্ষ থেকে আমাদের কাছে নির্দেশ এসেছে, বিশ্ব জাহানের প্রভুর সামনে আনুগ্রত্যের শির নত করে দাও। [সূরা আনআম-৭১]
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন তোমরা যার সাথে বন্ধুত্ত স্থাপন করবে তোমাদের তাদের সাথে হাশর মিজান হবে। এ থেকে আমরা বুজতে পারি আমরা যদি বিজাতীয় সাংস্কৃতিক পালন করি। হিন্দুদের কালচার তাহলে আমাদের তাদের সঙ্গে হাশর মিজান হবে। তাহলে আমাদের পোরা কপাল ছাড়া কিছু হবে না বা জুটবে না।
পরিশেষে বলা যায় যে আমাদের এ সকল বিষয় থেকে দূরে থাকতে হবে।এবং আল্লাহ তায়ালা ও রাসূলের প্রতি দৃড়তা আনতে হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url