শবে কদরের ফজিলত
শবে কদরের ফজিলত
৫ই মার্চ ২০২৪ মঙ্গলবার
শবে কদর হলো মর্যাদার রাত বা ভাগ্য রজনীর রাত। এ রাতে আমাদের রাসূলে পাক ( স.) মেরাজে গমন করেছিলেন। এবং নবি করিম (স.) মহান আল্লাহর সাথে
মোলাকাত করেছেন। মহান আল্লাহ তায়ালা নিজে বলেছেন, যে হাবীব আসেন আমি আপনাকে একটু কাছ থেকে দেখতে চাই। কারন যে নবি করিম (স.) নিজের মতো দেহের গঠন বানাতে বলাছেন মহান আল্লাহ তায়ালাকে।এ রাত আবার লাইলাতুল কদর নামেও পরিচিত। এ রাতে আমাদের পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছে। আবার মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের নবিকে তার উম্মতের জন্য ৫০ ওয়াক্ত নামাজ দিয়েছিলেন। কিন্তু আমাদের নবি তার উম্মতের কথা চিন্তা করে আল্লাহর কাছে কমাতে কমাতে ৫ ওয়াক্ত করে।
এ রাতেই প্রথম পবিত্র মক্কা মুকাররমার হেরা পর্বতের গুহায় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে ফেরেশতাদের সরদার হজরত জিবরাইল আলাইহিস সালামের মাধ্যমে বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর প্রতি মহাগ্রন্থ আল কোরআন অবতীর্ণ হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন: ‘রমজান মাস! যে মাসে কোরআন নাজিল হয়েছে মানবের দিশারি ও হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শনরূপে।’ (আল কোরআন, সুরা-২ আল বাকারা (মাদানি), রুকু: ২৩/৭, আয়াত: ১৮৫, মঞ্জিল: ১, পারা: ২ সাইয়াকুল, পৃষ্ঠা ২৯/৭)।
হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! (সা.) আমি যদি লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে আমি ওই রাতে আল্লাহর কাছে কী দোয়া করব? রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন; তুমি বলবে, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া; ফাফু আন্নি।’ অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন; তাই আমাকে ক্ষমা করে দিন।’ (ইবনে মাজা, সহিহ-আলবানি)
সর্বোপরি কোরআনের সংস্পর্শে একটি সাধারণ রাত ‘লাইলাতুল কদর’ বা ‘শবে কদর’ রজনীর সম্মানে বিভূষিত হয়েছে। কোরআনের সঙ্গে যার যতটুকু সম্পর্ক ও সংস্পর্শ থাকবে, তিনি ততটুকু সম্মানিত ও মর্যাদার অধিকারী হবেন। প্রিয় হাবিব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘কোরআনওয়ালাই আল্লাহওয়ালা এবং তাঁর খাস ব্যক্তি। (বুখারি শরিফ)। ‘যার অন্তরে কোরআনের সামান্যতম অংশও নেই, সে যেন এক বিরান বাড়ি।’ (বুখারি ও মুসলিম শরিফ)
মুহাক্কিকগণ বলেন, আরবিতে ‘লাইলাতুল কদর’ শব্দদ্বয়ে নয়টি হরফ বা আরবি বর্ণ রয়েছে; আর সুরা কদরে ‘লাইলাতুল কদর’ শব্দদ্বয় তিনবার রয়েছে; নয়কে তিন দিয়ে গুণ করলে সাতাশ হয়, তাই সাতাশে রমজানের রাতে শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। (তাফসিরে মাযহারি)
এ রাত সাধারণত আমরা ২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯ এ বলে থাকি। সাধারণ আমাদের ওলাএকরামগন ২৭ এ রমজানকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের উচিৎ এই বেজর রাতগুলোতে সমান তালে ইবাদত করা যেমন :
১.নফল নামাজ পড়া ২.কোরআন পড়া ৩.তসবিহ পড়া ৪. দুরুদ পড়া ক. ৫. তাহিয়্যাতুল অজু,৬. দুখুলিল মাসজিদ, ৭.আউওয়াবিন, ৮.তাহাজ্জুদ, ৯.সালাতুত তাসবিহ ১০.তাওবার নামাজ, ১১.সালাতুল হাজাত, ১২. সালাতুশ শোকর ও অন্যান্য নফল ইত্যাদি পড়া। খ. নামাজে কিরাত ও রুকু-সেজদা দীর্ঘ করা। গ. কোরআন শরিফ [১] সুরা কদর, [২] সুরা দুখান, [৩] সুরা মুয্যাম্মিল, [৪] সুরা মুদ্দাচ্ছির, [৫] ইয়া-সিন, [৬] সুরা ত-হা, [৭] সুরা আর রহমান ও অন্যান্য ফজিলতের সুরাসমূহ তিলাওয়াত করা; ঘ. দরুদ শরিফ বেশি বেশি পড়া; ঙ. তাওবা-ইস্তিগফার অধিক পরিমাণে করা; চ. দোয়া-কালাম, তাসবিহ-তাহলিল, জিকির-আজকার ইত্যাদি করা; ছ. কবর জিয়ারত করা; জ. নিজের জন্য, পিতা-মাতার জন্য, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও সব মোমিন মুসলমানের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনায় দোয়া করা।
পরিশেষে বলা যায় আমাদের এগুলো রাতে বেশি বেশি আমল করা ওপরের কাজগুলো যথাক্রমে পালন করা।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url