ঈদের দিনে মেয়েদের নামাজের বিবরন
ঈদের দিনে মেয়েদের নামাজের বিবরণ
২৭ শে মার্চ মঙ্গলবার ২০২৪
ছবি সংগ্রহীত
প্রত্যেক জাতির জন্য অনেক ধরনের উৎসব রয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন জাতির জন্য ভিন্ন ভিন্ন উৎসব রয়েছে। মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব হলো ঈদ। আর আমাদপর প্রতি বছর দুইটি ঈদ পালন করা হয়ে যেমনঃ- ১. ঈদ উল ফিতর ও ২. ঈদ উল আযহা।
হাদিস শরীফে বর্ণণা করা হয়েছে, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা) বলেছেন প্রত্যেক জাতিরই খুশির দিন থাকে আর মুসলমানদের জন্য খুশির দিন হলো ঈদুল ফিতরের দিন। (বোখারী ,মুসলিম )
মহিলাদের ঈদগাহে যাওয়া যাবে ,আর জামায়াতে নামাজ আদায় করা যাবে । মহিলারা বাড়িতে নামাজ আদায় করবে। কারন মেয়েদের নিজের কন্ঠ হলো পর্দা। মেয়েদের গলার আওয়াজ ভিন পুরুষে শুনলে অনেক বড় গুনাহ হবে। তাই মহিলাদের জামাতে নামাজ পড়া যাবে না।
প্রথম রাকাত
১। নিয়ত করে তাকবীরে তাহরীমা ‘আল্লাহু আকবার ‘বলে উভয় হাত বাঁধতে হবে।
২। তারপর ছানা পড়তে হবে।
ছানা উচ্চারণ:’সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়াতাআলা যাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।
৩। তারপর অতিরিক্ত ৩ তাকবীর দেয়া। এক তাকবীর থেকে আরেক তাকবীরেরতাহরীমার মতো বাঁধতে হবে।
৫। ‘বিসমিল্লাহ ‘সহ সূরা ফাতিহা পাঠ করতে হবে তারপর যেকোনো সূরা মিলিয়ে পাঠ করতে হবে।
৬। তারপর অন্য নামাজের মতো রুকু ও সেজদা করে প্রথম রাকাত নামাজ শেষ করা।
দ্বিতীয় রাকাত
১। ‘বিসমিল্লাহ ‘ সহ সূরা ফাতিহা পাঠ করে তারপরে যেকোনো সূরা মিলিয়ে পড়া।
২। সুরা মিলানোর পর অতিরিক্ত ৩পড়া।
২। সুরা মিলানোর পর অতিরিক্ত ৩ তাকবির দেওয়া।
৩। প্রথম ও দ্বিতীয় তাকবিরে উভয় হাত উঠিয়ে তা ছেড়ে দেওয়া।তৃতীয় তাকবির দিয়ে উভয় হাত তাকবিরে তাহরিমার মতো বেঁধে নিতে হয়।
৪। এরপর রুকুর তাকবির দিয়ে রুকুতে যাওয়া।
৫। সেজদা আদায় করে
৬। বৈঠকে বসা; তাশাহহুদ, দরূদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করা।
৭। নামাজের সালাম ফেরানোর পরে তাকবীর পড়া।
আমাদের ঈদের দিনে এই
তাকবির পড়তে হবে
উচ্চারণ : ‘আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবর ওয়া লিল্লাহিল হামদ।।
৫৪০. আহমদ ইবনু মানী’ (রহঃ) …… উম্মু আতিয়্যা রাদিয়াল্লাহু আনহা সূত্রেও অনুরূপ বর্ণিত আছে। – তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৫৪০ [আল মাদানী প্রকাশনী]
এই বিষয়ে ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ উম্মু আতিয়্যা বর্ণিত হাদীসটি হাসান-সহীহ। কতক আলিম এই হাদীস অনুসারে অভিমত গ্রহণ করেছেন। তারা দুই ঈদের সালাতে মহিলাদের গমনের অনুমতি দিয়েছেন।
আর কতক আলিম তা অপছন্দনীয় বলে মত প্রকাশ করেছেন। ইবনু মুবারক (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, এই যুগে সালাতুল ঈদায়নের উদ্দেশ্যে মহিলাদের গমন করা আমি অপছন্দনীয় বলে মনে করি। মহিলারা যদি এই বিষয়ে বায়না ধরেন তবে তার স্বামী তাকে সাজ-সজ্জা না করে সাধারণ কাপড়ে বের হওয়ার অনুমতি দিতে পারেন। কিন্তু তারা যদি এইভাবে সাদাসিধে ধরনে বের হতে অস্বীকার করে তবে স্বামী তাদেরকে বের হতে নিষেধ করতে পারেন। আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকেবর্ণিত আছে যে,
তিনি বলেনঃ বর্তমানে মেয়েরা কি করছে তা যদি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখতেন তবে অবশ্যই তিনি মসজিদে যেতে তাদেরকে নিষেধ করতেন যেভাবে বনী ইসরাঈল মহিলাদের নিষেধ করে দেওয়া হয়েছিল। সুফিয়ান সাওরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি সালাতুল ঈদের উদ্দেশ্যে মহিলাদের গমন অপছন্দনীয় বলে মত প্রকাশ করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ
باب مَا جَاءَ فِي خُرُوجِ النِّسَاءِ فِي الْعِيدَيْنِ حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ حَسَّانَ، عَنْ حَفْصَةَ بِنْتِ سِيرِينَ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، بِنَحْوِهِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، وَجَابِرٍ، . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أُمِّ عَطِيَّةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ ذَهَبَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِلَى هَذَا الْحَدِيثِ وَرَخَّصَ لِلنِّسَاءِ فِي الْخُرُوجِ إِلَى الْعِيدَيْنِ وَكَرِهَهُ بَعْضُهُمْ وَرُوِيَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْمُبَارَكِ أَنَّهُ قَالَ أَكْرَهُ الْيَوْمَ الْخُرُوجَ
لِلنِّسَاءِ فِي الْعِيدَيْنِ فَإِنْ أَبَتِ الْمَرْأَةُ إِلاَّ أَنْ تَخْرُجَ فَلْيَأْذَنْ لَهَا زَوْجُهَا أَنْ تَخْرُجَ فِي أَطْمَارِهَا الْخُلْقَانِ وَلاَ تَتَزَيَّنْ فَإِنْ أَبَتْ أَنْ تَخْرُجَ كَذَلِكَ فَلِلزَّوْجِ أَنْ يَمْنَعَهَا عَنِ الْخُرُوجِ . وَيُرْوَى عَنْ عَائِشَةَ رضى الله عنها قَالَتْ لَوْ رَأَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا أَحْدَثَ النِّسَاءُ لَمَنَعَهُنَّ الْمَسْجِدَ كَمَا مُنِعَتْ نِسَاءُ بَنِي إِسْرَائِيلَ . وَيُرْوَى عَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ أَنَّهُ كَرِهَ الْيَوْمَ الْخُرُوجَ لِلنِّسَاءِ إِلَى الْعِيدِ .
গ্রন্থঃ সূনান নাসাঈ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ১৯/ উভয় ঈদের নামায (كتاب صلاةصلاة العيدين)
মুসলিম নারীরা ঈদগাহে যেতে পারবে, ঈদের নামাজ পড়া এবং দোয়াতে অংশগ্রহণ করতে পারবে। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম এমনটিই নির্দেশ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে-হজরত উম্মে আতিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে এ মর্মে আদেশ করেছেন, আমরা যেন মহিলাদেরকে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহাতে নামাজের জন্য বের হয় এবং নামাজে অংশগ্রহণ করেন।
পরিণত বয়স্কা, ঋতুবতী ও গৃহবাসিনীসহ সবাই। তবে ঋতুবতী মেয়েরা নামাজ আদায় থেকে বিরত থাকবে তবে কল্যাণ ও মুসলিমদের দোয়ায় অংশ নিবে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল ! আমাদের মাঝে কারো কারো ওড়না নেই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সে তার অন্য বোন থেকে ওড়না নিয়ে পরিধান করবে।’ (মুসলিম)
তবে নারীদের ঈদের নামাজে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক নয়, বরং তা সুন্নাত। কেউ কেউ বলেছেন নারীদের ঈদের নামাজ পড়া নফল ইবাদত। মেয়েদের ঈদের নামাজে অংশগ্রহণ সম্পর্কে মাজহাবগুলোতে রয়েছে মত পার্থক্য।
ইমাম শাফেঈ রহমাতুল্লাহি আলাইহির মতে নারীদের ঈদগাহে নামাজ আদায় সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ।
> হানাফি মাজহাব মতে, যদি কোনো নারী ঈদের নামাজ পড়ে তবে তা নফল হবে। আর নফল নামাজ জামাআতে পড়া মাকরূহ। সুতরাং ফেতনার আশংকায় নারীদের ঈদের নামাজ আদায় করাও মাকরূহ।
বিশেষ করে
আমাদের দেশের ঈদগাহগুলোতে নারীদের ঈদের নামাজ আদায়ের আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেই। সেক্ষেত্রে ফেতনা ও বেপর্দার আশংকাই বেশি। আর এ কারণে নারীদের ঈদের নামাজে অংশগ্রহণ না করাই উত্তম।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url