রোজা না রাখলে কোন কোন ধরনের শাস্তি হতে পারে
১৪ ই মার্চ ২০২৪ বৃহস্পতিবার
ইসলামি শরিয়ত মতে ইসলামের স্তম্ব ৫ টি যথা- ১. কালেমা ২.নামাজ ৩. রোজা ৪. হজ ৫. জাকাত। এই ৫টি স্তম্ভর মধ্যে রোজা তিন নাম্বারে আছে। তাই এটি আমাদের জীবনে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেন, ‘হে মুমিনরা, তোমাদের ওপর রোজাকে ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যেন তোমরা আল্লাহভীরু হতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩)
রোজা ভঙ্গকারীর শাস্তি সম্পর্কে হাদিসে এসেছে-
আবু উমামা (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি তিনি বলেন, ‘একবার আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। এ সময় দুইজন ব্যক্তি এসে আমার দুই বাহু ধরে আমাকে দুর্গম পাহাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে তারা বলল, পাহাড়ে উঠুন।
আমি বললাম, আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তারা বলল, আমরা আপনার জন্য সহজ করে দিচ্ছি। আমি উঠা শুরু করি এবং পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছি। সেখানে প্রচণ্ড চিৎকারের শব্দ শোনা যায়। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কিসের শব্দ? তারা বলল,এটা জাহান্নামিদের৷ আওয়াজ।
এরপর তারা আমাকে এমন কিছু লোকদের কাছে নিয়ে যায় যাদেরকে পায়ের টাখনুতেবেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের গাল ছিন্নবিন্ন, তা হতে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তিনি বললেন, এরা এমন রোজাদার যারা (অকারণে রমজান মাসের) রোজা শেষ না করেই ভঙ্গ করত।’ (সহিহ ইবনে খুজাইমা, হাদিস নং : ১৫০৯)
আরেক হাদিসে আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘একদিন আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, একটি সম্প্রদায় উল্টোভাবে ঝুলছে। তাদের গলাটি ফাড়া এবং তা থেকে রক্ত ঝরছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম এরা কারা? বলা হল, এরা ঐসব ব্যক্তি যারা বিনা উযরে রমজান মাসের সিয়াম ভঙ্গ করেছিল।’ (সহীহ ইবনে খুযাইমাহ)
আবু উমামা বাহিলি (রা.) বলেন, আমি রাসূল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, একবার আমি ঘুমিয়েছিলাম। এ সময় দুজন মানুষ এসে আমার দুই বাহু ধরে আমাকে দুর্গম পাহাড়ে নিয়ে গেল। সেখানে নিয়ে তারা আমাকে বলল, পাহাড়ে উঠুন। আমি বললাম, আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তারা বলল, আমরা আপনার জন্য সহজ করে দিচ্ছি।
তাদের আশ্বাস পেয়ে আমি উঠতে লাগলাম এবং পাহাড়ের চূড়া পর্যন্ত গেলাম। সেখানে প্রচণ্ড চিৎকারের শব্দ শোনা যাচ্ছিল। আমি জিজ্ঞাসাকরলাম, এটা কীসের শব্দ? তারা বলল, এটা জাহান্নামীদের চিৎকার।
এরপর তারা আমাকে এমন কিছু লোকের কাছে নিয়ে গেল, যাদের পায়ের টাকনুতে শিকল বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের গাল ছিন্নভিন্ন এবং তা থেকে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এরা কারা? তারা বলল, এরা হচ্ছে তারা যারা রোজা রাখতো না এবং রোজা পূর্ণ করার আগেই ইফতার করত।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান: ৭৪৯১)।
বর্ণিত হাদিস দ্বারা বুঝা যায়- জাহান্নামের শাস্তিসমূহ থেকে শীতলতাও এক ধরণের শাস্তি। কিন্তু জান্নাতের আনন্দদায়ক অনুভূতি যেমন শোনেনি কোনো কান, দেখেনি কোনো চোখ, কল্পনা করেনি কোনো অন্তর, তেমনি জাহান্নামের শাস্তির কণা পরিমাণও দুনিয়াতে আমরা অনুভব করতে পারবো না। বস্তুত জাহান্নামের শাস্তির ভয়াবহতা মানুষের ধারনার বাইরে।
কাজেই আল্লাহ সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন এবং নিয়ম মেনে সঠিক উপায়ে রমজান মাসের ৩০টি রোজা রাখার তৌফিক দান করুক। তার জন্য শারীরিক সুস্থতা অনেক জরুরি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সুস্থতা নামক নেয়ামত দান করুক,আর সবাইকে রোজা রাখার তৌফিক দান করুক। ( আমিন)
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url