মৃত ব্যক্তিকে কবরে নামানোর পর তার সঙ্গে কী কী হয়
মৃত ব্যক্তিকে কবরে নামানোর পর তার সঙ্গে কী কী হয়
২৯ শে মার্চ ২০২৪ শুক্রবার
দুনিয়ার জীবনটা অস্থায়ী ঠিকানা। আমরা যেমন দুনিয়াতে একলা এসেছি, তেমনি আমাদের দুনিয়া ছেরে একলা যেতে হবে।
কারও মৃত্যুর সংবাদ শোনামাত্র কর্তব্য হলো- ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পড়া। ইন্তেকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার হাত-পা সোজা করে দেওয়া। চোখ-মুখ বন্ধ করে দেওয়া। খাটিয়ার ওপর শুইয়ে সম্পূর্ণ শরীর চাদর দ্বারা ঢেকে দেওয়া। যত দ্রুত সম্ভব দাফনের ব্যবস্থা করা। মুসলিম : ৯১৮
মানুষ যখন মরে যায়, তখন তাকে সবকিছু কমপ্লিট করে কবরের দিকে নিয়ে যায়। এবং তাকে কবরে শুয়িয়ে দেওয়া হয়। মৃতব্যাক্তিকে যখন কবরে শুয়িয়ে তার আপনজনেরা চলে আসে তখন কবর তার সঙ্গে নেককার অনুযায়ী ভালো, এবং বদকার অনুযায়ী খারাপ আচারণ করে।
যখন সবাই দাফনের কার্য সম্পন্ন করে বিদায় নেয় মৃত ব্যক্তি একা হয়ে যায়, ঠিক তখনই মহান রাব্বুল আলামীন তাঁর আত্মাকে পুনরুদ্ধার করেন। এবং আল্লাহর নির্দেশে তার এই খারাপ স্বপ্ন ভাঙ্গে। প্রথমত মৃত ব্যক্তি এটি ভেবে নেয় যে হয়তো তার খারাপ স্বপ্ন শেষ এবং সে ঘুম থেকে জেগে উঠেছে ভেবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
এরপর সে তার শরীর স্পর্শ করতে থাকে যা কিনা সবেমাত্র দাফন করা হয়েছে। তখন সে বিস্মিত হয়ে প্রশ্ন করে যে, আমার জামা কোথায়, তারপর তিনি বলেন আমি কোথায়, এই স্থানটি কোথায়, সর্বত্র কাদা-মাটি ময়লার গন্ধ আমি এখানে কি করছি?
তারপরই সে হঠাৎ বুঝতে পারে যে তার দেখা স্বপ্ন সত্যি ছিল। হ্যাঁ, সত্যিই তিনি এখন মৃত এবং আন্ডারগ্রাউন্ডে। কি অদ্ভুত তাই না?
প্রথমে কবর তাকে চাপ দেয়। বদকার হলে কবর এমনভাবে চাপ দেয়, যেমন ডিমের ওপর পাথর দিয়ে অনেক জোরে আঘাত করলে যেমন হয়।
আর নেককার হলে মা যেমন ছেলে বা মেয়েকে আদর করে মাথায় হাত বুলালে বা সুরমা দিলে যেমন হয়।বদকার হলে তারপর সোহেল জবাব হয়। বদকার হলে সে ছোঁয়াল জবাবের উত্তর দিতে পারেনা।তখন তাকে কঠিন তর শাস্তি প্রদান করা হয়। আর নেককার উত্তর দিতে পারে ফলে তাকে আরামের ব্যাবস্থা করে দেওয়া হয়।
অতঃপর তিনি তার প্রাণ-প্রিয় আব্বা আম্মা বা নিকটস্থ আত্মীয়-স্বজনকে চিৎকার করে ডাকতে থাকে তার সাহায্যের জন্য কিন্তু যা পরিপূর্ণরূপে বৃথা চেষ্টা মাত্র। কেউ তার ডাক শুনবে না আর এটাই হলো ইসলামের শরীয়ত।
ঠিক এই মুহূর্তে তার মনে পড়ে যে এই সময় একমাত্র আল্লাহ ভরসা। তাই তিনি তখন আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকেন।
"ইয়া আল্লাহ" " ইয়া রব" আমাকে ক্ষমা করুন। সে এমন ভাবে আর্তনাদ শুরু করে এক অবিশ্বাস্য ভয়ে যা সে তার জীবদ্দশায় কখনো অনুভব বা চিন্তাও করেনি।যদি সে একজন ঈমানদার মুমিন হয় তবে তার ভয় দূরীভূত করতে দুজন ফেরেশতা তাকে সান্তনা দিতে থাকবে এবং তার সর্বোত্তম সেবা করবে।
আর যদি সে খারাপ ব্যক্তি হয় তবে তার ভয় দ্বিগুণ অনুভূত হবে দুজন ফেরেশতা তার ভয়ের পরিমাণ আরো বাড়িয়ে দেবে এবং তাকে নির্মমভাবে কুৎসিত কাজ অনুযায়ী নির্যাতন শুরু করবে।
হে মহান রাব্বুল আলামিন, আমাদের সকল গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দিন ইসলামের বিধান অনুযায়ী কাজ করার তৌফিক এবং ঈমানের সাথে পরকালে পাড়ি দেওয়ার জন্য নসিব দান করুন।(আমিন )।মৃত ব্যক্তিকে কবরে নামানোর পর আমাদের কিছুক্ষন অপেক্ষা করতে হবে।
এ প্রাসঙ্গে রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা অপেক্ষা করো যতক্ষণ, একটি উট জবাই করে উটটি বানাতে যতটুকু সময় লাগে ততক্ষণ। এটা হতে পারে আধা ঘণ্টা কিংবা আরো বেশি। এ ছাড়াও রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য অপেক্ষা করো, তার জন্য দোয়া করো, ক্ষমা প্রার্থনা করো। কারণ তখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হবে। এ জন্য মূলত এটিকে রাসুল (সা.) মুয়ানাসা হিসেবে দেখেছেন।
এর মানে হচ্ছে, কিছুটা সময় তাকে দেওয়া। এতে মানুষের আবেগ প্রশমিত হবে। ধুমধাম করে কবর দিয়েই চলে যাওয়াটা শুধু উচিত নয়। সুতরাং কিছু বিষয় মানা উচিত। এতে করে মানুষের অন্তর নরম হয়। এতে প্রশান্তিও মিলতে পারেন। এই জন্য রাসুল (সা.) চেয়েছেন মৃত ব্যক্তির আপনজন কিছুক্ষণ কবরের
পাশে অপেক্ষা করুক।
পরিশেষে বলা যায় আমাদের নেককাজ করতে হবে বদকাজ থেকে বিরত থাতে হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url