রসুন খাওয়ার নিয়ম এবং এর উপকারিতা ও অপকারিতা
রসুন খাওয়ার নিয়ম এবং এর উপকারিতা ও অপকারিতা
৪ই সেপ্টেম্বর সোমবার, ২০২৩
ছবি সংগৃহীত
আমাদের দৈনন্দিন কাজের একটা অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হয় রসুন। এতে রয়েছে নানান ওষুধের গুণ, অনেক প্রশ্ন করে থাকেন রসুন কিভাবে খেতে হয়, কিভাবে খেলে এর সুফল পাওয়া যায় এবং রসুন এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। যারা এই সমস্ত প্রশ্ন করে থাকেন, তাদের জন্য আজকের পোস্টটি মূলত। তবে চলুন জেনে নেয়া যাক রসুন খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা -
রসুন খাওয়ার নিয়ম -
রসুন মূলত একটি মসলাজাতীয় উপাদান। এর ঘ্রান অনেক তীব্র এবং ঝাঁজালো। তীব্র ঘ্রান যুক্ত থাকার কারণে অনেকেই এ মসলা খেতে পারে না। তাই আপনি চাইলে অনেকভাবে রসুন খেতে পারেন। তারমধ্যে তিনটে উত্তম মাধ্যম হচ্ছে,
- প্রথমত আপনি যদি কাঁচা রসুন খেতে পারেন সেটা হবে সবচেয়ে বেশি উপকারী।
- দ্বিতীয়তঃ আপনি রসুন সিদ্ধ করে খেতে পারেন, এটাও শরীরের জন্য বেশ উপকারী।
- তৃতীয়তঃ আপনি চাইলে পানিতে ভিজিয়ে রেখে রসুনের পানি খেতে পারেন। এটি একটি পরীক্ষিত পদ্ধতি।
আরো কয়েকটি উপায় রসুন আপনি খেতে পারেন। আপনার কাছে যদি রশুন খেতে অসুবিধা মনে হয় বা খেতে ভালো লাগছেনা তাহলে নিয়মিত তরকারির সাথে রান্না করে খেতে পারেন। তবে সবচেয়ে বেশি উপকারী হচ্ছে কাঁচা খাওয়া।
রসুনের উপকারিতা:
রসুন মূলত একটি মসলা জাতীয় উপাদান। সারাবিশ্বে রান্নার মসলা হিসেবে রসুন সৃষ্টির শুরু থেকে চলে আসছে। ভালো করার জন্য রসুনের উপকার অন্যতম। সারা বিশ্বের মানুষ রান্নার পাশাপাশি রসুন কে বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করে আসছে। তার কারণ হচ্ছে রসুনে প্রচুর পরিমাণে ময়শ্চার, ভিটামিন, প্রোটি্ ফ্যাট মিনারেল ফাইবার ও কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। ভিটামিন ও মিনারেল এর মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, থিয়ামিন ভিটামিন সি ইত্যাদি। খালি পেটে রসুন খেলে বিভিন্ন রোগ দূর হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে রসুন। চলুন জেনে নেয়া যাক রসুনের কিছু উপকারিত -
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে:
বর্তমানে অনেক মানুষ আছেন যারা উচ্চ রক্তচাপ রোগে ভোগেন। অনেক সময় অনেক ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়েও কোন ফল পাচ্ছে না। যার ফলে রোগীকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। কিন্তু আপনি চাইলে প্রাকৃতিক ভাবে এ রোগটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। আর এর জন্য আপনাকে নিয়মিত রসুন সেবন করতে হবে। কারণ উচ্চ রক্তচাপের উপসর্গ ভালো করতে রসুন একটি ভালো ঔষধ হিসেবে কাজ করতে পারে ।
প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক হিসেবেঃ
একজন মানুষ যদি সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এক অথবা দুই কোয়া রসুন খেতে পারে ,এটি তার শরীরে শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক এর মত কাজ করবে। সাধারণত খালি পেটে রসুন খেলে ব্যাকটেরিয়াগুলো উন্মুক্ত হয় এবং তখন তা রসুনের ক্ষমতার কাছে ব্যাকটেরিয়াগুলো হেরে যায় ।যার ফলে শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া সমূহ থাকতে পারে না।
যৌনতা বৃদ্ধিঃ
যৌনতা বৃদ্ধি করণে রসুনের উপকারিতা অপরিসীম। তার কারণ হচ্ছে আপনি যদি নিয়মিত করে প্রতিদিন সকালে এক কথা দুই কোয়া রসুন খেতে পারেন তাহলে যৌনতা বৃদ্ধি অবশ্যই পাবে। যাদের বয়স হয়ে গেছে তাদের যৌবন শক্তি ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে রসুন। আপনি চাইলে ঘি এর সাথে ভেজে রসুন খেয়ে নিতে পারে এতে করে আপনার যৌবন অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়ে যাবে। যৌবন রক্ষার জন্য আরো বিভিন্ন উপায় ঔষুধ সেবন করা যায়।
হজমের সমস্যা মুক্তিঃ
অনেক মানুষ আছে যাদের হজমে অনেক ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। খাবার খাওয়ার পর ঠিকমতো হজম হয় না। তাদের জন্য বেস্ট উপায় হচ্ছে এই রসুন। আপনি চাইলে দিনে দুই থেকে তিন কোয়া রসুন কুচি করে সামান্য ঘিয়ে ভেজে সবজি সাথে অথবা এমনি খাওয়ার অভ্যাস করলে এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
ঠান্ডা ও জ্বর সারাতেঃ
মানুষের প্রায়শই একটা সমস্যা হচ্ছে জ্বর ঠান্ডা। সচরাচর মানুষ এই সমস্যায় পড়ে যায়। আরে সমস্যার সমাধান থেকে মুক্তি পেতে হলে আপনি চাইলে দিনে দুই থেকে তিন কোয়া রসুন কাচা খেয়ে ফেলতে পারেন।
রসুনের অপকারিতা
মোটামুটি যেসব জিনিসের উপকারিতা রয়েছে সেসব জিনিস এর অপকারিতা ও রয়েছে। তার মধ্যে রসুন ব্যাতিক্রম নয়। রসুন যেমন উপকারী তেমনটা ক্ষতিকারক। অতিরিক্ত কোনো কিছুই সেবন করা ভালো না। তার জন্য দিনে দুই কোয়া রসুনের উপর খাওয়া যাবেনা । অনেকে যারা আছে রসুন খেলে এলার্জি হওয়ার আশঙ্কা থাকে তাদের অবশ্যই কাঁচা রসুন খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। রসুন খাওয়ার ফলে অনেকের মাথা ব্যথার সমস্যা বমির ভাব বা অন্য কোন সমস্যা দেখা দিতে পারে, তাদের জন্য কাঁচা রসুন না খাওয়াই ভালো।
অনেকে আছে যাদের শরীর থেকে রক্তপাত সহজে বন্ধ হয় না তাদের জন্য অতিরিক্ত রসুন না খাওয়াই ভালো। তার কারণ হচ্ছে, রসুন রক্তের জমাট বাঁধার ক্রিয়াকে বাধা প্রদান করে থাকে। আবার অনেকে আছে রসুন খেলে পাকস্থলীতে অস্বস্তি বোধ দেখা দেয় , সে ক্ষেত্রে খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে। কারণ রসুন খাওয়ার ফলে মায়ের দুধের মাধ্যমে শিশুর পাকস্থলীতে ঢুকে শিশুর যন্ত্রণার কারণ ঘটাতে পারে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url