OrdinaryITPostAd

রসুন খাওয়ার উপকারিতা, সকালে খালি পেটে রসুন খান

 

রসুন খাওয়ার উপকারিতা,

সকালে খালি পেটে রসুন খান

৪ই সেপ্টেম্বর সোমবার, ২০২৩





      ছবির সংগৃহীত 


রসুন খুব উপকারী একটি মসলা, এটি শুধুমাত্র একটি মসলা হিসেবেই নয় বরং ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে  ৷ রসুন রয়েছে নানান রকম প্রাকৃতিক গুনাগুন এবং নানান রোগের মহা ঔষধ ।   প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, আয়োডিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর রসুনকে এক কথায় সুপার ফুড বলা হয়।

প্রাচীনকাল থেকে শরীরের নানাবিধ রোগের চিকিৎসায় রসুন ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বর্তমানের উন্নত মেডিক্যাল সাইন্স নিত্যনতুন ওষুধ আবিষ্কার করলেও রসুনের কার্যকারিতার সামনে সবই ফিকে হতে বাধ্য।খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে অনেক এবং অনেকে এটি সকালে খালি পেটে খেয়ে থাক।  

শক্তিশালী এই মশলা দিয়ে প্রায় সব ধরণের জটিল ও সাধারণ রোগ দমন করা সম্ভব। পড়ে ফেলুন এই আর্টিকেলটি আর জেনে নিন রসুন খাওয়ার উপকারিতা ও কিভাবে খেলে ভালো হয় সে সম্পর্কে -


রসুন খাওয়ার উপকারিতাঃ

১. অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করেঃ

রসুন একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক। এটি শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলো ধ্বংস করে ফেলে। রসুনের এই গুণ ভালো কাজ করে যদি আপনি প্রতিদিন সকালে নাশতার আগে খালি পেটে রসুন খান। 

২. হৃদরোগ ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ

রসুন কোলেস্টেরল কমিয়ে হার্ট অ্যাটাক ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমায়। উচ্চ রক্তচাপে ভোগা রোগীদের জন্য ডাক্তাররা রসুন খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাছাড়া এই মশলা জাতীয় খাদ্য উপাদানটি রক্তের সুগারও নিয়ন্ত্রণে রাখে। 

৩. ডিটক্সিফাই করেঃ 

দেহকে ডিটক্সিফাই করতে রসুনের জুড়ি নেই। এটি কৃমি, অ্যাংজাইটি, ডিপ্রেশন, হাই ফিভার, ডায়বেটিস, ক্যান্সারের মতো রোগের জীবাণু দেহ থেকে বের করে দেয়। 

৪. শ্বাসতন্ত্রের আরোগ্য দেয়ঃ 

শ্বাসতন্ত্রের সকল ধরণের রোগ সারানোর ক্ষমতা রসুনের আছে। যক্ষ্মা, হুপিং কাশি, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি, এবং ফুসফুসের অন্যান্য রোগ নির্মূল করতে নিয়মিত রসুন খাওয়া উচিত।

৫. ঠান্ডাজনিত সমস্যা দূর করেঃ

শুধু কাঁচা রসুন বা কাঁচা রসুনের টনিক ঠান্ডাজনিত সমস্যা ও জ্বর নিরাময় করে। এজন্য অনেকেই রসুন এবং সরিষার তেল গরম করে ঠান্ডা লাগলে তা শরীরে মাখে। ঠান্ডা দূর করতে সাহায্য করে। 

৬. শিরা-উপশিরা বাধাহীন রাখেঃ

দেহের শিরা-উপশিরায় রক্ত জমাট বাঁধলে অথেরোস্ক্লেরোসিস নামক একটি রোগ হয়। রসুন এই জমাট বাঁধাটা প্রতিরোধ করে। এছাড়াও এটি শিরা-উপশিরায় কোন দূষিত বস্তু থাকতে দেয় না। 

৭. গেঁটে বাত নিরাময় করেঃ

যারা দীর্ঘদিন ধরে গেঁটে বাতের সমস্যায় ভুগছেন, ওষুধ খেয়েও ফল পাচ্ছেন না, তারা আজ থেকেই নিয়মিত রসুন খাওয়া শুরু করুন। প্রতিদিন ২ কোয়া করে খেলে বাত অনেকটাই সেরে যাবে।

৮. ফোঁড়া, পুঁজ, ও কাটাছেঁড়া সারায়ঃ

শরীরে যেকোন পুঁজ ও ব্যথাযুক্ত ফোঁড়ায় রসুনের রস লাগালে আরাম পাওয়া যায়। ক্ষতস্থানে রসুনের রস লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন। শুকিয়ে আসলে ধুয়ে ফেলুন। সেই সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে রক্ত পরিষ্কারের জন্য। দাদ, খোসপাঁচড়ার মত রোগেও এভাবে রসুন ব্যবহার করতে পারেন। কাঠ বা বাঁশের ছোট টুকরা চামড়ায় বিঁধে গেলে তা আগে সাবধানে বের করে নিন। এরপর ঐ জায়গায় রসুনের কোয়া কেটে লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে রাখুন। অল্প কয়েকদিনে ঘা সেরে যাবে। 

৯. দাঁত ও মাড়ি সুস্থ রাখেঃ

রসুনের নির্যাস মাউথ ওয়াশ হিসেবে কাজ করে। নিয়মিত রসুনের নির্যাস দিয়ে কুলি করলে মাড়িতে ব্যাকটেরিয়ার বিস্তার বন্ধ হয় এবং দাঁত ব্যথা সেরে যায়। 

১০. ব্রণ সারায়ঃ

ব্রণ ও ব্রণের দাগ সারাতে রসুনের রস দারুণ কাজ করে। শরীরে আঁচিল হলেও রসুনের রস কাজে দেয়। ত্বকের বার্ধক্য প্রতিরোধ ও অন্যান্য দাগছোপও সারায় রসুন। 

১১. ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ

রসুন শরীরকে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়ার শক্তি জোগায়। কোলন, রেক্টাল, গলব্লাডার, প্রোস্টেট, এবং ব্রেস্টের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে এই মশলা। এছাড়াও রসুন ঈস্ট ইনফেকশন দূর করে। 

১২. হাড় সুস্থ রাখেঃ

অস্টিওপরোসিস ও হাড়ের জয়েন্টের ব্যথা নিরাময় করে রসুন। এছাড়াও রসুনের পুষ্টি উপাদান হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে৷


রসুন কিভাবে খাওয়া ভালোঃ

রসুন খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে, ২ কোয়া কাঁচা রসুন সকালে খালি পেটে খাওয়া অথবা দুপুর ও রাতের খাবারের পরে খাওয়া। ২ কোয়ার বেশি কখনোই কাঁচা খাওয়া উচিত নয়। আর ভরা পেটে খাওয়ার চাইতে খালি পেটে রসুন খেলে উপকার পাওয়া যায় বেশি। 

রান্নায় রসুন না হলে চলেই না৷ কিন্তু সত্যি কথা বলতে, রান্না করা রসুন থেকে পুষ্টিগুণ পুরোটা পাওয়া যায় না। তরকারিতে রসুন খাওয়ার চাইতে রসুনের ভর্তা করে খাওয়া ভালো৷ যাই হোক, রসুন খাওয়ার নিয়ম জেনে নিই -

> রান্নায় রসুন খেলেও দিনে ২ কোয়া রসুন খেতেই হবে। যক্ষ্মা ধরা পড়লে গোটা একটি রসুনের কোয়াগুলো আলাদা করে সারাদিনে কয়েকবার খাবেন। যক্ষ্মা দ্রুত নির্মূল হবে।ব্রেকফাস্টের পরে এক কোয়া রসুন না চিবিয়ে গিলে ফেলুন। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং সিজন চেঞ্জের সময় শরীর অসুখ করবে না।

> প্রতিদিন রসুন কাঁচা বা আধা সেদ্ধ করে খেলে হৃদপিণ্ড সুস্থ থাকে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে আধা সেদ্ধ করে খেলে রসুনে বিদ্যমান অ্যালিসিনের কার্যকারিতা কমে যায়। আদা, মধু, এবং রসুন মেশানো চা খেলে ঠান্ডা ও জ্বরের সমস্যা কমবে।

>  ঠান্ডার জন্য রসুনের একটি টনিক বানিয়ে খেতে পারেন। একটি মাঝারি কাচের বয়ামে ৩-৪ কোয়া রসুন থেতলে দিন। তারপর ওতে মধু ঢেলে দিন। বয়ামের মুখ এয়ার টাইট করে বেঁধে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। প্রতিদিন খালি পেটে এই মিশ্রণটি আধা চা চামচ করে ছয় বার খাবেন। জ্বর-ঠান্ডার পাশাপাশি বিভিন্ন সংক্রমণ দূর হবে। ২-৩ কোয়া রসুন কুচি করে ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে খান। প্রতিদিন খেলে শরীর থাকবে ফিট ও এনার্জিতে ভরপুর।

> প্রতিদিন সকালে এক কোয়া রসুন, লেবুর রস গরম পানিতে গুলে কার সাথে মধু মিশিয়ে রোজ খেলে খুব দ্রুত ওজন কমায়। শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে খুব দ্রুত কাজ করে। 


রসুন আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী তেমনি রয়েছে কিছু ক্ষতিকর দিক। তাই নিয়মিত রসুন খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেই, কেননা শরীরে অন্য কোন সমস্যা থেকে থাকলে বা এলার্জি থেকে থাকলে রসুন খাওয়া  ভালো নাও হতে পারে। 





এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪