OrdinaryITPostAd

যাকাত দেওয়ার সঠিক নিয়ম, যাদের ওপর যাকাত দিতে হবে

 

যাকাত দেওয়ার সঠিক নিয়ম, যাদের ওপর যাকাত দিতে হবে

১১ এপ্রিল  মঙ্গলবার , ২০২৩





ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের একটি হচ্ছে যাকাত। মূলত রমজান মাসেই সাধারণত মানুষ যাকাত প্রদান করে। কিন্তু যাকাত আসলে কতটা দিতে হয়, অর্থাৎ মানুষের স্থাবর সম্পত্তি না অস্থাবর সম্পত্তি, নাকি স্থাবর-অস্থাবর উভয়ের ওপরেই এটা ধার্য?

যাকাত বিস্তারি সম্পর্কে যেনে নেওয় যাক

i: মুসলমানদের উপর ফরজ: যাকাত আমাদের ইসলাম ধর্মের তৃতীয় স্তম্ভ। মুসলমান সমাজের জন্য যাকাতকে ফরজ করে দেয়া হয়েছে এবং নির্দিষ্ট সম্পদের মালিক হলেই আপনাকে যাকাত দান করতে হবে।

ii: দাসত্বে না থাকা: আপনি যদি স্বাধীন ব্যক্তি হন অর্থাৎ আপনি যদি কারো দাস না হন তবে আপনার উপর যাকাত ফরজ।

iii: নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ থাকা: কারো উপর তখনই আপনার উপর ফরজ হবে ইসলামিক শরীয়ত অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ তার কাছে থাকবে। এই সম্পদগুলো হতে পারে টাকা, স্বর্ণ , রৌপ্য, শস্য ও প্রাণী।

iv: ঋণ মুক্ত হওয়া: ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির ওপর যাকাত ফরজ হবে না যাকাত ফরয তখনই হবে যখন আপনি আপনার পাওনাদারকে সম্পূর্ণ টাকা বুঝিয়ে দিয়ে ঋণ মুক্ত হয়ে আপনার যাকাত আদায় করবেন।

কিভাবে যাকাতের পরিমাণ নির্ধারিত হবে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার বলেছেন,”কোন ব্যক্তির পুরো সম্পত্তি যার অর্থ নির্ধারণ করা যায়, সেটি যদি এক বছরের বেশি সময় ধরে তার অধিকারে থাকে, তাহলে সেই সম্পদ ও সম্পত্তির ওপর যাকাত দিতে হবে। এই সম্পদের আড়াই শতাংশ হচ্ছে তার যাকাত।”


তিনি বলছেন, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, শেয়ার মার্কেটে করা বিনিয়োগ যা এক বছরের বেশি সময় ধরে আমানতকৃত আছে এবং সেখান থেকে মুনাফা আসছে, এবং সঞ্চয়পত্র এই সব ধরণের অর্থনৈতিক অধিকারের ওপর যাকাত দিতে হবে।

আর যাকাতের পরিমাণ হবে দৈনন্দিন প্রয়োজন পূরণের পর সাড়ে বায়ান্ন তোলা পরিমাণ রূপা অথবা সাড়ে সাত তোলা পরিমাণ স্বর্ণ থাকলে অথবা এর সমমূল্যের ব্যবসার মালিকানা থাকলে মোট সম্পদের আড়াই শতাংশ হারে যাকাত দিতে হবে।

কারা যাকাত পাওয়ার যোগ্য?

ইসলাম ধর্মের বিধান অনুযায়ী, আট ধরণের মানুষকে যাকাত প্রদান করা যাবে। অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার বলেছেন, এর মধ্যে রয়েছেন ভিক্ষুক, মিসকিন মানে যিনি অভাবগ্রস্ত কিন্তু কারো কাছে সাহায্য চাইতে পারেন না, ঋণগ্রস্থ ব্যক্তির ঋণমুক্তির জন্য, যাকাত আদায়কারী কর্মচারী, নওমুসলিম, আল্লাহর পথে এবং মুসাফির। এর বাইরে দাসমুক্তির জন্য যাকাতের অর্থ ব্যয় করা যায়, কিন্তু দাস প্রথা বিলুপ্ত হয়েছে বহু বছর। ফলে সেটি এখন আর কার্যকর নয়।

জাকাতের নিসাব

ক. সোনা ৭.৫ তোলা=৯৫.৭৪৮ গ্রাম প্রায়। খ. রুপা ৫২.৫ তোলা=৬৭০.২৪ গ্রাম প্রায়। (আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৩৯৪, আল ফিকহুল ইসলামী : ২/৬৬৯)

দেশি-বিদেশি মুদ্রা ও ব্যাবসায়িক পণ্যের নিসাব নির্ধারণে সোনা-রুপা হলো পরিমাপক। এ ক্ষেত্রে ফকির-মিসকিনদের জন্য যেটি বেশি লাভজনক হবে, সেটিকে পরিমাপক হিসেবে গ্রহণ করাই শরিয়তের নির্দেশ। তাই মুদ্রা ও পণ্যের বেলায় বর্তমানে রুপার নিসাবই পরিমাপক হিসেবে গণ্য হবে। তাই যার কাছে ৫২.৫ তোলা সমমূল্যের দেশি-বিদেশি মুদ্রা বা ব্যাবসায়িক পণ্য মজুদ থাকবে, তার ওপর জাকাত ওয়াজিব হবে।

যে সম্পদের ওপর জাকাত ফরজ, তার শতকরা ৪০ ভাগের এক ভাগ (২.৫০ শতাংশ) জাকাত দেওয়া ফরজ। সম্পদের মূল্য নির্ধারণ করে শতকরা আড়াই টাকা বা হাজারে ২৫ টাকা হারে নগদ অর্থ কিংবা ওই পরিমাণ টাকার কাপড়চোপড় বা অন্য কোনো প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে দিলেও জাকাত আদায় হবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৫৭২; তিরমিজি, হাদিস : ৬২৩)

যদি সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা কিংবা বাণিজ্যিক পণ্যের মধ্যে কোনোটি পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ না থাকে; কিন্তু এসবের একাধিক সামগ্রী এ পরিমাণ রয়েছে, যা একত্র করলে সাড়ে ৫২ তোলা রুপার সমমূল্য বা তার চেয়ে বেশি হয়, তাহলে এ ক্ষেত্রে সব সম্পদ হিসাব করে জাকাত দিতে হবে। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ৭০৮১)

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪