OrdinaryITPostAd

ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ম ও নিয়ত

 

ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ম ও নিয়ত

১০ এপ্রিল সোমবার, ২০২৩




আসছে পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদ মানে আনন্দ ৷ খুশি ৷ ইসলাম স্বভাবজাত ধর্ম ৷ মানুষের আনন্দ বেদনা সবই স্বাভাবিক নিয়মে হয় ৷ মনকে প্রফুল্ল রাখতে ও নির্মল বিনোদনের জন্য ইসলাম বছরে বড় দুটি উৎসবের সুযোগ দিয়েছে ৷ প্রধান ধর্মীয় উৎসব হলো ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা । মুসলিম উম্মাহ প্রতি বছর দু’টি ঈদ উদযাপন করে। ঈদের খুশি প্রকাশ করে তারা সালাত আদায় ও কুরবানির মাধ্যমে ৷ ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। বছরে দুই বার ঈদের নামাজ পড়ার কারণে অনেকেই নামাজ পড়ার নিয়ম ভুলে যান। আবার কেউ কেউ জানাযার সাথে গুলিয়ে ফেলেন ৷ তাই আপনাদের সুবিধার্থে ঈদের নামাজের নিয়ম তুলে ধরা হলো-


 

কোরবানি সংক্রান্ত জরুরী মাসআলা মাসায়েল 


ঈদের নামাজ মূলত মাঠে, ঈদগাহে আদায় করা সুন্নাহ ৷ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খোলা জায়গায় ঈদের নামাজ আদায় করতেন। আমাদের সমাজে ঈদগাহ অপ্রতুল ৷ কোনো কোনো সময় ঈদের দিন বৃষ্টি হয় ৷ সবমিলিয়ে যদি খোলা স্থানের ব্যবস্থা না থাকে তবে মসজিদেও ঈদের নামাজ পড়া যাবে।

ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম

ঈদের নামাজ খোলা জায়গা, মসজিদ কিংবা বাসা-বাড়ি যেখানেই পড়া হোক না কেন, অবশ্যই তা জামাআতের সঙ্গে পড়তে হবে। জুমআ নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য যেসব শর্ত রয়েছে, ঈদের নামাজ আদায় করার জন্যও একই শর্ত প্রযোজ্য।
১ ৷ ওয়াকফকৃত জায়গায়
২ ৷ কমপক্ষে ৩ জনের জামায়াত
৩ ৷ খুতবা পাঠ ও শ্রবণ
৪ ৷ সূর্য উদিত হওয়ার পর দ্বিপ্রহরের আগে পড়া
সুতরাং জামাআত ছাড়া ঈদের নামাজ আদায় করা যাবে না। বাসা-বাড়িতে ঈদের নামাজ আদায় করতে হলেও অবশ্যই জামাআতে ঈদের নামাজ আদায় করতে হবে। আর একান্ত অপারগতা ছাড়া বাসায় ঈদের জামায়াত শুদ্ধ হবে না ৷ যদি কোনো সমস্যা থাকে, বা কোনো পরিস্থিতির কারণে তিনি যদি ঈদগাহে না যেতে পারেন, তাহলে বাসায় পড়তে পারবেন। কিন্তু এ ছাড়া ঈদের নামাজ বাসায় পড়ার বিধান নেই। ঈদের নামাজ বাড়িতে পড়ার বিষয় নয়। তাহলে তো আর ঈদের সালাতের কোনো মূল্যই থাকল না। ঈদগাহের প্রয়োজন হলো না। ঈদের সালাতেরও কোনো প্রয়োজনীয়তা থাকবে না। তাহলে ঈদের মর্যাদাই তাহলে হারিয়ে যাবে। তবে, সমস্যার কারণে বাড়িতে পড়তে চাইলে তিনি পড়তে পারবেন।

ঈদের নামাজের নিয়ম



ঈদের নামাজের জন্য অন্যান্য ওয়াক্তিয়া নামাজের মতো কোনো আজান ও ইকামত নেই। তবে জুমআর নামাজের মতোই উচ্চ আওয়াজে কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়। দিনের বেলার সালাত হওয়া সত্ত্বেও ৷ 

অন্যান্য নামাজ থেকে ঈদের নামাজের পার্থক্য হলো অতিরিক্ত ৬টি তাকবির দিতে হবে।
• প্রথম রাকাআতে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত বেঁধে অতিরিক্ত তিন তাকবির দিয়ে সুরা ফাতিহা পড়া।
• দ্বিতীয় রাকাআতে সুরা মিলানোর পর অতিরিক্ত তিন তাকবির দিয়ে রুকতে যাওয়া।

ঈদের নামাজের নিয়ত

 

আরবি নিয়তঃ

نويت ان اصلي لله تعالي ركعتي صلاة العيد الاضحى مع ستة تكبيرات واجب الله تعالى اقتديت بهذا الامام متوجها الى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر
ঈদুল আযহার নামাযের আরবি নিয়তের বাংলা উচ্চারণ: ‘নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা আলা রাকয়াতাই ছালাতি ঈদিল আযহা মাআ ছিত্তাতি তাকবীরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তা আলা ইক্বতাদাইতু বিহাজাল ইমামি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার

ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ত


ঈদের দুই রাকাআত ওয়াজিব নামাজ অতিরিক্ত ৬ তাকবিরের সঙ্গে এই ইমামের পেছনে কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর জন্য আদায় করছি… আল্লাহু আকবার।
প্রথম রাকাআত

১. তাকবিরে তাহরিমা
ঈদের নামাজে নিয়ত করে তাকবিরে তাহরিমা ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত বাঁধা।
২. ছানা পড়া
‘সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়াতাআলা যাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।
৩. অতিরক্তি ৩ তাকবির দেয়া।
এক তাকবির থেকে আরেক তাকবিরের মধ্যে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় বিরত থাকা। প্রথম ও দ্বিতীয় তাকবিরে উভয় হাত উঠিয়ে তা ছেড়ে দেয়া এবং তৃতীয় তাকবির দিয়ে উভয় হাত বেঁধে নেয়া।
৪. আউজুবিল্লাহ-বিসমিল্লাহ পড়া
৫. সুরা ফাতেহা পড়া
৬. সুরা মিলানো। অতপর নিয়মিত নামাজের মতো রুকু ও সেজদার মাধ্যমে প্রথম রাকাআত শেষ করা।
দ্বিতীয় রাকাআত

১. বিসমিল্লাহ পড়া
২.  সুরা ফাতেহা পড়া
৩. সুরা মিলানো।
৪. সুরা মিলানোর পর অতিরিক্ত ৩ তাকবির দেয়া। প্রথম রাকাআতের মতো দুই তাকবিরে উভয় হাত কাধ বরাবর উঠিয়ে ছেড়ে দেয়া অতপর তৃতীয় তাকবির দিয়ে হাত বাঁধা।
৫. তারপর রুকুর তাকবির দিয়ে রুকুতে যাওয়া।
৬. সেজদা আদায় করে তাশাহহুদ, দরূদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করা।


ঈদের খুতবা শোনা

ঈদের নামাজে ইমাম কর্তৃক খুতবা পড়া সুন্নত এবং মুসুল্লিদের খুতবা শোনা ওয়াজিব। জুমার নামাজের ন্যায় প্রথমে বিষয় ভিত্তিক খুতবা এবং পরে সানি খুৎবা পাঠ করতে হয়। … সাধারণত খুতবার পরে দোয়া করা হয়।
ঈদের নামাজ পড়ার পর ইমাম খুতবা দেবে আর মুসল্লিরা খুতবা মনোযোগের সঙ্গে শুনবে। অবশ্য অনেকেই খুতবা না দেয়ার ব্যাপারে শিথিলতার কথা বলেছেন। খুতবা না দিলেও ঈদের নামাজ আদায় হয়ে যাবে বলে মত দিয়েছেন।

ঈদুল আজহার দিনের বিশেষ সুন্নাত 


ঈদের দিনের সুন্নত হলো-
১. খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠা
২.  গোসল করা
৩. মিস্ওয়াক করা
৪. সামর্থ্য অনুযায়ী নতুন পোশাক পরিধান করা
৫. আতর ব্যবহার করা
৬. মহল্লার মসজিদে গিয়ে জামায়াতে ফজরের নামায আদায় করা
৭. ঈদগাহে হেঁটে যাওয়া
৮. ঈদুল আযহার দিন সকালে কিছু না খেয়ে ঈদগাহে যাওয়া
৯. ঈদুল আজহার দিন পবিত্র কুরবানীর গোশত দিয়ে খাওয়া শুরু করা
১০. ঈদগাহে এক রাস্তা দিয়ে যাওয়া এবং অন্য রাস্তা দিয়ে ফিরে আসা
১১. সকাল সকাল পবিত্র ঈদের নামায পড়ার জন্য যাওয়া
১২. ঈদের নামায ঈদগাহে গিয়ে পড়া, সম্ভব না হলে মহল্লার মসজিদে গিয়ে ঈদের নামায পড়া।
১৩. নিম্নোক্ত দোয়া পড়তে পড়তে ঈদগাহে যাওয়া:
الله اكبر الله اكبر لا اله الا الله والله اكبر الله اكبر ولله الحمد
উচ্চারণঃ
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল  হাম্দ।
১৪. শরীয়তের সীমার মধ্যে থেকে খুশি প্রকাশ করা ইত্যাদি ঈদের সুন্নত। 


ঈদুল আজহা বা কুরবানীর ঈদ ২০২২ কবে হবে?

উত্তরঃ ঈদুল আজহা / কুরবানীর ঈদ ২০২২ অনুষ্ঠিত হবার সম্ভাব্য তারিখ ১০ জুলাই ২০২২।

 

শেষকথাঃ

সুপ্রিয় পাঠক! আশা করছি ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ম ও নিয়ত সম্পর্কে সম্যক একটি ধারণা লাভ করতে পেরেছেন ৷ এ সংক্রান্ত কোন মাসালা জানার আর বাকি থাকবে না ইনশাল্লাহ ৷






এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪